যুব সমাবেশে মির্জা ফখরুল আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল একটি বিবৃতি দিয়েছে, এই বিবৃতিতে প্রধান কথা হচ্ছে সংলাপের কথা। সেটার জবাব দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- আমরা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছি যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনা আসবে। আমার যে প্রশ্ন, আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটা আপনাদেরকে প্রমাণ করতে হবে। আর সবার আগে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করতে হবে।

সোমবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদলের উদ্যোগে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং অবৈধ সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে’ যুব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের বিজ্ঞপ্তির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দলটি কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোন প্রতিনিধি দল নয়। এই দলটি হচ্ছে সম্পূর্ণ স্বাধীন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রধান দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট পার্টির থিংক ট্যাঙ্ক তারা পাঠিয়েছে যে, বাংলাদেশে কোন নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে কিনা? এটা দেখা এবং নির্বাচনকে পর্যবেক্ষণ করা জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বড় কোন টিম পাঠাবে কি না। এই ছিলো তাদের উদ্দেশ্য। তারা ৫ দিন বাংলাদেশের নির্বাচনের সঙ্গে যারা জড়িত রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, সম্পাদক, নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং আমাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারা একটা বিবৃতি দিয়েছেন, এই বিবৃতিতে তারা ৫টি সুপারিশ করেছেন।

বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে প্রধান কথা হচ্ছে সংলাপের কথা।
তিনি বলেন, সেটার জবাব দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন-আমরা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছি যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনা আসবে। সবার আগে আওয়ামী লীগের কাছে আমার যে প্রশ্ন, আপনারা যে কথা বলছেন, ওই সরকারে যে বসে আছেন- আপনারা কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? এটা আপনাদেরকে প্রমাণ করতে হবে। আমি প্রমাণ করছি যে, আপনি সাংবিধানিকভাবে বৈধ নন, অবৈধ। সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চদশ সংশোধনী দিয়েছেন সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে। অবৈধভাবে আপনি ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আজকে যে বলছেন সংবিধানের ভিত্তিতে হতেই হবে, তাহলে সবার আগে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ আপনি অবৈধভাবে আছেন। সেই কারণে ভূতের মুখে রাম নাম শোভা পায় না। জনগণকে প্রতারণা করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আমাদের কথা পরিস্কার, আগে পদত্যাগ করেন, সংসদকে বিলুপ্ত করেন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন এবং একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচনে আসেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সভা সফল হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে না পারবো ততক্ষণ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তির কারণ নাই। বিএনপি নির্মূল করার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার প্রচেষ্টা করছে সরকার। পুলিশ এবং আদালত একযোগে নামছে বিএনপিকে দমন করতে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার মরণ কামড় দিবে। তারা গেরিলা কায়দায় গ্রেপ্তার করে এবং বিনা কারণে মামলা দেয় তাহলে আমরাও বিনা কারণে ছাড় দিতে রাজি না।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম আজাদ, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।