শনিবার রাজধানীতে বড় তিন রাজনৈতিক দলের সমাবেশ। এ সমাবেশ ঘিরে রাজনীতিতে চলছে উত্তাপ-উত্তেজনা। বিএনপি নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটক এলাকায়। এ ছাড়া মতিঝিলে সমাবেশ করতে চায় জামায়াত। যদিও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো দলই সমাবেশের অনুমতি পায়নি ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে। জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র কাছে বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। দল দুটি নতুন করে কোনো প্রস্তাব দেয়নি। তারা জানিয়েছে নির্ধারিত ভেন্যুতেই সমাবেশ করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এ কারণে স্বল্প সময়ে ভেন্যু পরিবর্তন করা যাবে না। এমন অবস্থায় শর্ত সাপেক্ষে দুই দলকেই তাদের পছন্দের ভেন্যুতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হতে পারে। আজ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারে ডিএমপি। আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সমাবেশের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা থাকলেও জামায়াত নিয়ে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ কারণে জামায়াতের কর্মসূচি ঘিরে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও দলটির নেতারা বলছেন, তারা মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছেন। গতকাল দলের পক্ষ থেকে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভারপ্রাপ্ত আমীর মতিঝিলেই সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। তিনি দলের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে যোগ দেয়ার নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। গতকাল সমাবেশের ভেন্যু নির্ধারণ করতে পল্টন থানা থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে দুটি বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব চাওয়া হয়। কিন্তু দুই দলই ফিরতি চিঠিতে জানিয়ে দেয় নির্ধারিত স্থানেই তারা সমাবেশ করবেন। চিঠিতে সমাবেশে কতো লোক হবে তার সংখ্যাও জানতে চাওয়া হয়। আওয়ামী লীগ জানিয়েছে সমাবেশে দুই লক্ষাধিক নেতাকর্মী আসবেন। আর বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে লক্ষাধিক নেতাকর্মী হতে পারে। ওদিকে জামায়াতের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে তাদের সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম হবে। তবে আদৌ তারা সমাবেশ করতে পারবে কিনা। প্রশাসন সমাবেশ করতে না দিলে কী পরিস্থিতি হয় তা নিয়ে এখন নানা আলোচনা চলছে। যদিও দলটির নেতারা বলছেন, সমাবেশ ঘিরে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হচ্ছে। তারপরও সমাবেশ সফল হবে।
শনিবার বড় তিন দলের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে কী পরিস্থিতি হয় তা নিয়ে নানা আলোচনা রাজনৈতিক ময়দানে। বিশেষ করে শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি কি কর্মসূচি দেয় তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল সর্বত্র। যদিও দলটির নেতারা জানিয়েছেন, কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে। এইদিন থেকে সরকার পতনের ক্ষণগণনা শুরু হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে চলবে একদফার কর্মসূচি। এ ছাড়া পরিস্থিতির ওপর কর্মসূচির ধরনে পরিবর্তন হতে পারে বলেও নেতারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচি ঘিরে যাতে ঢাকা অচল না হয়ে পড়ে সেদিকে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে শনিবারের সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাড়া মহল্লায় আজ থেকেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করে মাঠের পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবে সরকারি দল।