ফের একতরফা ও ইউনিক নির্বাচন হতে যাচ্ছে:গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশে আরেকটি একতরফা ও ইউনিক নির্বাচন হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ না নেওয়ায় আমরা একটা ইউনিক নির্বাচন দেখতে পাচ্ছি। এটি হবে যেমন খুশি তেমন নির্বাচন। ফলে আমরা এখন ঘোরতর সংকটে আছি।

বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চায়। কিন্তু এটি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে আরেকটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন হয়তো হয়ে যাবে, কিন্তু এরপর কী হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

তিনি বলেন, গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যারা কথা বলতেন না, এখন তারাও কথা বলছেন। আমি ঘর থেকে বের হলেই মানুষ আমাকে প্রশ্ন করে, ভোট দিতে পারি না, কী করব? আমি বলি, আল্লাহ আল্লাহ করেন। কারণ বর্তমান কমিশন নির্বাচন হয়তো করে ফেলবে, কিন্তু নির্বাচনের পর কী হবে, এটি নিয়ে আমি সন্দিহান।

বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। এটি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে আরেকটি একতরফা নির্বাচন হচ্ছে। এখন বিভিন্ন মহল থেকে সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। তারাও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধীরা চাইলেও নির্বাচন করতে পারবে না। কারণ, তাদের সব নেতাই এখন জেলে। ইতোমধ্যে অনেকেই সাজা পেয়েছেন, আরও অনেকে পাবেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, একতরফা নির্বাচনই নিয়তি।

বেসরকারি সংগঠন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমীন মুরশিদ বলেন, আমরা একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। এর থেকে আমাদের বের হতে হবে। বের হওয়ার জন্য আমরা নাগরিক সমাজ কী করতে পারি, সেটির ওপরই নির্ভর করবে জাতির অস্তিত্ব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম লাইন হচ্ছে ‘গভর্নমেন্ট বাই দ্য ডিসকাশন’। তাই সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে। সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। সংলাপের সময় শেষ হওয়া মানে গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটা। হতাশ হলে হবে না।

লিখিত প্রবন্ধে ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা প্রকল্পের সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি সমঝোতা না হয়, তবে সামনের দিনগুলোতে জাতিগতভাবে আমরা চরম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হতে পারি, দেশ চলে যেতে পারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে, যা কারোই কাম্য নয়। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হোক।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।