॥ প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ ॥
বাংলাদেশের প্রথম অন্তর্র্বর্তীকালীন সংবিধান হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। আমাদের মুক্তিসংগ্রামের রাজনৈতিক দলিল হিসেবে একটি উজ্জ্বল মহৎ কীর্তি এটি। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় আইনি দলিল হিসেবে এটি গৃহীত। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের আদর্শিক ভিত্তি কী হবে, তার সুস্পষ্ট ঘোষণা ছিল এখানে। বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত গণপরিষদের ক্ষমতায়নে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর ১৭ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয়। ঘোষণাপত্রে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের একটি অন্যায় যুদ্ধ ঘোষণা করার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করা হয়। ওই ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতোপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়। সেই ঘোষণাপত্রের মহান আদর্শ বাস্তবায়নে বীর জনগণ আত্মনিয়োগ ও প্রাণ উৎসর্গ করেছিল। অগণিত জনগণের আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও রক্তের আস্তরণের ওপর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে। এ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র একটি উচ্চতম আদর্শ বাংলার প্রতিটি অঞ্চলজুড়ে বিছিয়ে দিয়েছিল। এ আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্যই লাখো শহীদের রক্তদানসহ মুক্তিসংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে। বিশ্বের যেসব রাষ্ট্র সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সেসব রাষ্ট্র স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় দর্শনকেই রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং সংবিধানের ভিত্তি করেছে। কেবল বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম। স্বাধীনতা অর্জনের পর সেই ঘোষিত আদর্শকে অস্বীকার করে রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থ, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম এবং তদ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতোপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করিলাম।” অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’- এ তিনটিই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রের আদর্শ ও রাষ্ট্রীয় দর্শন। বিশ্বের যেকোনো মুক্তিকামী দেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের চেয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি ছিল আদর্শিক দিক দিয়ে নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম। বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত পর্বে প্রধান দুটি কাজ ছিল জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের সময় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও এর ভিত্তিতে সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করা।
তিনটি শব্দের মাধ্যমে আদর্শিক চেতনার ব্যবহার শুরু হয়েছে মূলত ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে। পরবর্তীতে সংঘটিত সব বিপ্লব ফরাসি বিপ্লবের চেতনা থেকে সমৃদ্ধ হয়েছে। কানাডার সংবিধানেও রয়েছে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সুশাসন এবং আধুনিক জার্মানির মূল মন্ত্র হচ্ছে ঐক্য, সুবিচার ও মুক্তি। ফ্রান্সের বিপ্লবের মূলমন্ত্র ছিল মুক্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব। ফ্রান্সের এ ঘোষণাপত্রের আদর্শ সংবিধানে রাষ্ট্রীয় দর্শন হিসেবে নির্দেশনা দিয়েছে এবং সংবিধানে সেই তিন আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের ঘোষণাপত্রের ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’- এ তিন আদর্শ বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বা সংবিধানের কোথাও রাষ্ট্রের আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। ঘোষণাপত্রের আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র নির্মিত হবে- এটাই ছিল শহীদদের রক্তের সঙ্গে আমাদের সম্পাদিত চুক্তি। শহীদগণ সেই আদর্শের ভিত্তিতেই নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। যে চুক্তি জনগণ জানে না তার জন্য রক্তও দিতে পারে না। সুতরাং এ আদর্শ পরিবর্তনযোগ্য নয়, প্রতিস্থাপনযোগ্য নয় এবং উপেক্ষাযোগ্য নয়।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের সংবিধান মোতাবেক গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র- এ চারটি বিষয়কে বাংলাদেশের মূলনীতি হিসেবে দেখতে পাই। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার যে অঙ্গীকার জাতি গ্রহণ করেছিল- আকাশছোঁয়া সাধনা নিয়ে জাতি উদিত হয়েছিল, স্বপ্ন পূরণের ক্ষমতা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল, তা শুরুতেই বিনষ্ট করা হয়েছে। ১৯৭২-এর সংবিধানে এবং সংবিধানের প্রস্তাবনায় মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তিকে উপেক্ষা করে জাতিকে নির্দেশনা দিতে চেয়েছে। যেসব দেশের সংবিধান অনুকরণ করে আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে সেসব দেশের সংবিধান কোনো রাজনৈতিক বিপ্লবের ফলাফল নয়।
একটি আদর্শিক রাষ্ট্রের সর্বজনীন দিক-দর্শন রয়েছে এ ঘোষণাপত্রে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এ শব্দত্রয়ের মাধ্যমে একটি স্বাধীন জাতির আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। এ প্রতিফলন ’৫২, ’৬৯ ও ’৭০-এর আন্দোলনের ধারাবাহিকতারই চূড়ান্ত রূপ। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক রাজনৈতিক দর্শনের অনিবার্যতা উপেক্ষা করেই ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র দর্শনের মডেল দিয়ে সংবিধান প্রণীত হয়। ফলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক রাজনৈতিক দর্শন-রাষ্ট্রীয় কাঠামো-ভবিষ্যতের রূপরেখা নিয়ে কোনো দার্শনিক প্রজ্ঞা সংবিধানে প্রতিফলিত হয়নি। রাষ্ট্রের কোনো নির্দেশনায় নেই সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের উচ্চতম আদর্শ প্রতিষ্ঠার প্রতি।
মুক্তিযুদ্ধের তিন আদর্শকে ভিত্তি করেই রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিনির্ধারণ করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমাদের সংবিধানে আদর্শ উল্লেখ না করে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি ঘোষণার ফলে এখন আদর্শও নেই আর ঘোষিত নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিতও হচ্ছে না। ফলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ না হয়ে রাষ্ট্র ভয়াবহ বিপজ্জনক পথেই ধাবিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী শাসনব্যবস্থার কারণে রাষ্ট্র এখন লোভী, হিংস্র, রক্তপিপাসু হয়ে উঠেছে, মানুষের মতো বাঁচার উপায় রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। আত্মিক, নৈতিক ও উচ্চতম আদর্শের রাষ্ট্রচিন্তা নির্বাসিত হয়েছে। আদর্শ পরিবর্তনযোগ্য নয়, সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্র পরিচালনায় নতুন উপাদান, সংযোজন-বিয়োজনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র আদর্শিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
সাম্য, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, সামাজিক মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক শোষণ ও সাংস্কৃতিক গোলামি থেকে মুক্তি লাভের জন্যই এদেশের আপামর জনসাধারণ দীর্ঘ ৯ মাসের মরণপণ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি নুতন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটিয়েছিল। মূলত আমাদের মুক্তিসংগ্রামের মৌলিক বিষয়ের প্রধান অংশে ছিল গণতন্ত্র। ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানি শাসকদের অগণতান্ত্রিক আচরণের কারণেই সবচেয়ে বেশি ফুঁসে উঠেছিল বাংলাদেশের মানুষ। তাই তো আমরা স্বাধীন হতে চেয়েছি। আমাদের দেশকে গণতান্ত্রিক উপায়ে শাসন করার প্রত্যাশাতেই এ স্বাধীনতা যুদ্ধ। এ জন্য বাংলাদেশ সংবিধানের মূলনীতির প্রথমেই গণতন্ত্রকে প্রধান্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দীর্ঘ বায়ান্ন বছরের অর্ধেকও আমরা গণতান্ত্রিক শাসনের স্বাদ পাইনি। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক ধারার বিলুপ্ত ঘটিয়ে কাক্সিক্ষত পদযাত্রা শুরু হয়েও সেই গণতন্ত্র আবারও হুমকির সম্মুখীন হলো খোদ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের হাতে। যে প্রত্যাশা নিয়ে আমরা পিণ্ডির গোলামির শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম, সে প্রত্যাশা আমাদের কাছে অধরাই থেকে গেছে। গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র জনগণের শাসন, শাসকগোষ্ঠীর জবাবদিহি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন গণমাধ্যমকে সরকার মোটেই গুরুত্ব না দিয়ে তাদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্যই গণতান্ত্রিক সকল রীতিনীতি উপেক্ষা করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নির্বাচনের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। বিরোধীদলকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীবিহীন নির্বাচন এবং পরবর্তীকালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদের ভোটবিহীন নির্বাচন, জালভোট প্রদান, ব্যালটবাক্স ছিনতাইসহ নানাবিধ ঘটনার মাধ্যমে চমক দেখিয়ে গণতন্ত্রকে স্বৈরাচারী শাসনের লাগাম হিসেবে ব্যবহার করছে। এখানেই হিসেবের খাতায় অংক মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে। এটা আমাদের স্বাধীনতার জন্য রীতিমতো অশনিসংকেত। মূলত শাসনকার্যে জনগণের সম্পৃক্ততা উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নেয়া মোটেই সম্ভব নয়।
মূলত দার্শনিক জন লকের দর্শনের মূল ভিত্তি ছিল সাম্য। আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখ রয়েছে সমান মর্যাদার ভিত্তিতেই সব মানুষের সৃষ্টি। আর সাম্য আছে আইনগত সাম্য, রাজনীতির সাম্য, সামাজিক সাম্য অর্থাৎ সব মানুষ একই আইন প্রণয়ন ও নেতৃত্ব নির্বাচনে সমান অধিকার এবং জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর প্রতি সমান অধিকার। মানবিক মর্যাদা নিয়ে ১৯৪৮ সালে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা ছিল সব মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান। জার্মান সংবিধানে মৌলিক অধিকারের শীর্ষে রয়েছে মানবিক মর্যাদা। এতে বলা হয়েছে মানবিক মর্যাদা অলঙ্ঘনীয়। একে রক্ষা করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। আর সামাজিক সুবিচার হচ্ছে এমন এক ব্যবস্থা, যা ব্যক্তিজীবনে পূর্ণতা আনে সমাজ থেকে তার প্রাপ্য নিশ্চিত করে এবং সমাজে সক্রিয় অবদান রাখতে সহায়তা করে।
সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সে স্বপ্ন পূরণের উপযোগী রাষ্ট্র নির্মিত হয়নি। গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জীও মনে করেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের তিন আদর্শ, এটা অখণ্ডিত সত্য। এটাকে বিকৃত করা যায় না।’ মুক্তিযুদ্ধ জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার দেবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যেই সে আদর্শ ভয়ঙ্করভাবে পরাজিত হয়, আদর্শিক ভিত্তি বিসর্জন দেওয়া হয়। আর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ওপর চরম আঘাত হেনেছি। আমরা ক্ষমতার নিরাপত্তা চেয়েছি আদর্শের নিরাপত্তা উপেক্ষা করেছি। ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’Ñ এর দর্শনগত ভিত্তি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক পর্যালোচনা করে রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিনির্ধারণ করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আমরা বিজয়ের বায়ান্ন বছর উদযাপন করেছি, এটি আমাদের অনেক বড় একটি সফলতা। কিন্তু সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো এখনো সোনার হরিণের মতো অধরাই থেকে গেছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে জীবন সংগ্রামে পরাজিতবোধের লক্ষণ ফুটে উঠছে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খতিয়ান নিতে গেলে স্বীকার করতে হয় উন্নয়ন ঠিকই ঘটেছে, তবে তা শ্রেণিবিশেষকে ঘিরে। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর ‘গণ’ তার খুদকুঁড়া পেয়েই মনে হয় সন্তুষ্ট থাকছে বা সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হচ্ছে। গণতান্ত্রিক উন্মুক্ত আকাশে বিচরণ করার অধিকার প্রদান এখন সময়ের দাবি। গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জী যথার্থই বলেছেন, “মুক্তিযুদ্ধের আদর্শই হচ্ছে আমাদের একমাত্র আদর্শ। ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’ হবে সব আইনের উৎস। সুতরাং বিদ্যমান সংবিধানে সংশোধনী এনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র এবং আদর্শকে বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। আর সেই আদর্শের ভিত্তিতে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উপযোগী রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি উদ্ভাবন করতে হবে।” হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে জনগণকে মুক্ত করে বিভেদের রাজনীতি থেকে ফিরে এসে ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ার প্রয়াস থাকলেই উন্নয়নের রোডম্যাপে এগিয়ে যাবে আমাদের বাংলাদেশ।
লেখক: শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক; প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …