সম্ভাব্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এমপি রবির পক্ষে থাকার অঙ্গীকার

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবির পক্ষে থাকার অঙ্গীকার করলেন সদরের বিভিন্ন বেসরকারী হাইস্কুলের অর্ধশতাধিক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টার পর শিক্ষকরা সাতক্ষীরা-২ আসনের বর্তমান এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবির মুনজিতপুরস্থ বাসভবনে যান এবং তার পক্ষে থাকার এই অঙ্গীকার করেন। নির্বাচনী আচারণবিধির ২০০৮ এর ১৪ (২) নং ধারা অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণায় কোন প্রার্থীর পক্ষে শিক্ষক বা কর্মকর্তা কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করলে তা বিধি লংঘন এবং চাকুরী বিধির পরিপন্থি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরও শিক্ষকদের এই দল বেধে প্রার্থীর বাড়িতে যেয়ে মিটিং করার ঘটনায় তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, গতকাল বিকালে সাতক্ষীরা সদরের অর্ধশতাধিক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এমপি প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবির বাড়িতে যান। এসময় সাতক্ষীরা শহরের নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহর সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম, আবুল কাশেম, মিজানুর রহমান, আব্দুল জব্বারসহ ৭ জন। এসময় শিক্ষকরা বিগত ১০ বছরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সহায়তা করায় এমপি রবির প্রসংশা করেন এবং আগামী ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনে তার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।

এব্যাপারে সাতক্ষীরা শহরের নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর সাথে যোগাযোগ করতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার রিং দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষক সমিতির অফিস থেকে এমপি সাহেবের বাসায় গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের বলেছেন ‘আমি গত ১০ বছর আপনাদের পাশে ছিলাম। আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে দিয়েন। আমার জন্য দোয়া করবেন।’ এছাড়া অন্য কোন কথা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষকরা তাদের বক্তব্যে বিগত ১০ বছরে তাদের চাকুরী দেওয়াসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমপি কর্তৃক বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য উপস্থাপন করেন। বক্তারা বলেন, সংসদ সদস্য আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৪তলা ভবন দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এমপি সাহেব আমার প্রতিষ্ঠন সম্প্রাসরণে উর্দ্ধমূখী ভবন দিয়েছেন। ভবণ সংস্কারের জন্য অনুদান দিয়েছেন। উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ সংসদ সদস্যের প্রতি এসব উন্নয়ন ও অনুদান পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। এরপর এমপির পক্ষ থেকে শিক্ষকদের মিষ্টিমুখ করানো হয়।

অপর একটি সূত্র জানায়, সভায় সাতক্ষীরা সদরের মাধ্যমিক স্তরের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভায় সাতক্ষীরা সদরের অর্ধ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষক ও কর্মী সমর্থকসহ প্রায় ২৫০জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত এসব শিক্ষকদের অধিকাংশই সহকারী প্রিজাডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যেই প্রশিক্ষণের চিঠি পেয়েছেন।

Please follow and like us:

Check Also

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত ইইউ

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার ইউরোপীয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।