আটলান্টিকের ওপাড় থেকে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না

তরুণ সমাজকে উদ্দেশ্য করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আমরা যদি নিশ্চুপ থাকি, তাহলে আটলান্টিকের ওপাড় থেকে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না। আমাদের এক তৃতীয়াংশই তরুণ, তারা যদি ভূমিকা না রাখে, তাহলে কেউ এসে পরিবর্তন করে দিয়ে যাবে না।
শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি বাংলাদেশ আয়োজিত অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আগামী দিনে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার কোন পর্যালোচনাই এবার হলো না। যে কারণে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের কাছেই পৌঁছালো না। এটা গণতন্ত্রের বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হলো। নির্বাচনকে ঘিরে এই ইশতেহারটা একটা রাজনৈতিক শূন্যতার মধ্যে দিয়ে এসেছে। ফলে সরকার, রাজনীতি ও দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, জবাবদিহি না থাকলে বৈষম্য বাড়ে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের নির্বাচন এর আগে দেখেছি। ১৯৮৮, ১৯৯৬ সালে দেখেছি। নির্বাচন যদি বহু মানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এর ফলাফলও টিকিয়ে রাখা কঠিন। আগামী দিনে অর্থনীতি যেভাবে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি আগামী দিনে কই গিয়ে দাঁড়াবে এই উৎকণ্ঠা সবার মাঝে।
এই নির্বাচনকে ‘বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটাকে সাধারণভাবে আমরা নির্বাচন বলছি।

কিন্তু আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আমি বলি এটি একটি বিশেষ নির্বাচনী তৎপরতা। এর ফলে ইতিহাসের কাছে নাগরিকদের দায় বেড়ে গেল। আগামী দিনে আমাদের ভূমিকা আরও বাড়বে।

বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা দেখছি যে যতবার নির্বাচন করেছে, তার আয় গাণিতিকভাবে সে পরিমাণ বেড়ে গেছে। যে যতবার নির্বাচন করেছে, তার আয় ততবার বেড়েছে। তার মানে হল নির্বাচনে আসাই হলো আয় বাড়ানোর ভালো একটা রাস্তা। কিন্তু এভাবে তো আপনি পুরো রাষ্ট্রকে অধিকারহীন করে দিয়ে সংকীর্ণ একটি গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় সম্পদের মালিকানা করে দিচ্ছেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যে যতবার নির্বাচিত হয়েছে, গাণিতিক হারে তার সম্পদ তত বেড়েছে। অনেকেরই দেখা গেছে- সম্পদের পরিমাণ ৫০০ গুণ বেড়ে গিয়েছে, কিন্তু তারা কি সেই সম্পদ অনুপাতে পূর্বের তুলনায় ৫০০ গুণ বেশি কর দিয়েছে? এনবিআর কি কখনো সেই খোঁজ নিয়েছে?
দেবপ্রিয় বলেন, প্রার্থীদের সম্পর্কে আমরা জানতে পারি হলফনামার মাধ্যমে। সেখানে যে সম্পদের বিবরণ দেয়া হয়েছে এবং যে ট্যাক্সের বিবরণ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর কখনও তুলনামূলক বিশ্লেষণ হয়? যদি তাই হয়, তাহলে অনেকেরই দেখেছি আয় ৫০০ গুণ পর্যন্ত বাড়ল, তাহলে তিনি কি সে হারে কর দিয়েছেন? আমি মনে করি আগামী দিনে এটা খুঁজে বের করা এনবিআরের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আইএমএফ বলছে আমাদের কর জিডিপি বাড়াতে হবে, আমি মনে করি এই হলফনামা আমাদের জন্য বড় একটি সুযোগ। এখন এনবিআর কি করে সেটাই দেখার বিষয়।  তারা কি আগামী দিনে এ বিষয়গুলো নিয়ে বলবেন?

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।