তথ্য চাওয়ায় শেরপুরের সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনা ক্ষমতার অপব্যবহার কি না তা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে ৫ই মার্চ শেরপুরের নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া উম্মুল বানিনের কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করার ঘটনায় এক সাংবাদিককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ড পাওয়া শফিউজ্জামান রানা দৈনিক দেশ রূপান্তরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা বলে জানা গেছে। তথ্য চাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনা শোনার পর থেকেই আমি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। গত পরশু আমার কাছে এ তথ্য এসেছে। আমি দুই ধরনের তথ্য পেয়েছি। একটি হচ্ছে, তথ্য চাওয়ার অপরাধে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরেকটি হচ্ছে, তিনি অসদাচরণ করেছিলেন। তিনি সেখানের একজন নারীকে উত্ত্যক্ত করেছেন, খারাপ ব্যবহার করেছেন। এখানে কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি ।
আমি চাচ্ছি, এটার একটা সুষ্ঠু তদন্ত হোক। তারপর ঘটনা কী ছিল; সেটা বের করা হবে।প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে তথ্য কমিশন থেকে সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধান তথ্য কমিশনের সঙ্গেও কথা হয়েছে আমার। তারা এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত শেষে যেটা সঠিক-সেটাই করা হবে। সেই পর্যন্ত ওই সাংবাদিক কারাগারে থাকবেন কি না জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, আদালত এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তখন আসলে আমাদের কিছু বলার থাকে না। আদালত বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাকে বের করার জন্য কোনো আইন তথ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। এ বিষয়ে এখন আদালতে যেতে হবে। আমরা যেটা করবো, এখানে যদি অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকে-ইউএনও কিংবা সরকারি কোনো কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সেটিও আমরা দেখবো। তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনের প্রয়োগ মানেই ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আমি করি না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে অপব্যবহার করার সুযোগ থাকে। কাজেই এখন পুরো বিষয়টি না জেনে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক হবে না। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে, আমি সেখানে যুক্ত হই, পরশু দিন থেকে আমি এটার মধ্যে ঢুকেছি। আমি খোঁজ খবর রাখছি, পর্যবেক্ষণ করছি। মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, আমি নিশ্চিত করছি তদন্ত সাপেক্ষে যাতে সঠিক তথ্য বের করা হয়। কেউ যাতে সে, সাংবাদিক, শিল্পী বা যে-ই হোন না কেন-যাতে ক্ষমতার অপব্যবহারের কাছে ভিকটিম না হন, সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। এ বিষয়ে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।