মাটি ও আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের গাছের চারা উৎপাদন হয় সাতক্ষীরায়। এসব চারার মধ্যে রয়েছে ফলদ, বনজ, ঔষধি ও বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আমের চারা। এখানকার উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চাহিদাও রয়েছে দেশব্যাপী। বছরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ চারা উৎপাদন হয়। যার বাজারমূল্য ২৫০ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা উৎপাদন করা সম্ভব সাতক্ষীরায়। বিশেষ করে বেলে দো-আঁশ মাটি হওয়ায় মানসম্মত চারা উৎপাদন হয় এখানে। সাতক্ষীরার আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, পেয়ারা বা আমড়ার চারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হচ্ছে।
সামাজিক বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিএম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘সব ধরনের গাছের চারা উৎপাদনে সম্ভাবনাময় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা। এখানে ফলদ, বনজ, ঔষধি ছাড়াও বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা উৎপাদন হয়। উৎপাদিত গাছের চারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। বেসরকারি পর্যায়ে বছরে অন্তত ১ কোটি ২৫ লাখ বিভিন্ন প্রজাতির চারা উৎপাদন হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারিভাবে বছরে ৩০-৩৫ হাজার গাছের চারা উৎপাদন হয়।’
সদর উপজেলার ফয়জুল্লাহপুর গ্রামের তৌহিদ হাইব্রিড নার্সারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, ১০ বিঘা জমিতে নার্সারি করেছেন তিনি। ২০০১ সাল থেকে তিনি আমের চারা উৎপাদন করেন। বছরে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ চারা উৎপাদন করেন।
সাতক্ষীরা জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘জেলায় তিন শতাধিক নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে ফলদ, বনজ ও ঔষধিসহ বছরে ১ কোটি ২৫ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ চারা উৎপাদন হয়। যার বাজারমূল্য ২৫০ কোটি টাকা। নার্সারি কেন্দ্র করে অন্তত ৪০-৫০ হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’
সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল বলেন, ‘এ জেলায় যেমন বিপুল পরিমাণ গাছের চারা উৎপাদন হয়, তেমনি প্রচুর গাছ কেটে ফেলা হয়। বিশেষ করে ইটভাটায় নারকেল, খেজুর, আমসহ অন্যান্য কাঠজাতীয় অসংখ্য গাছ পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বিশুদ্ধ শ্বাস নিতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকবে।’