উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ি ঘেরের পানি নিষ্কাশনের জন্য বেঁড়িবাঁধে অবৈধভাবে বসানো হচ্ছে প্লাস্টিকের তৈরি ‘নাইন্টি’ নামক পাইপ। এসব পাইপ স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত হলেও পরিবেশ ও বাঁধের স্থায়িত্বের ওপর পড়ছে মারাত্মক প্রভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভবিষ্যতে বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা বাড়িয়ে দিতে পারে।
সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি চাষের জন্য ঘেরে পানি উঠানো ও নামানোর জন্য এই ‘নাইন্টি’ পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, আগে স্লুইস গেটের মাধ্যমে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। কিন্তু এখন অনেকেই নিয়ম না মেনে বাঁধ কেটে পাইপ বসিয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আকরম হোসেন বলেন, ঘেরে পানি রাখার সুবিধার জন্য কেউ কেউ নিজের মতো করে বাঁধ কেটে নাইন্টি বসাচ্ছে। এতে বর্ষাকালে ভাঙন দেখা দেয়, আবার লবণাক্ত পানিও ঢুকে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পাইপ ব্যবস্থার ফলে বাঁধের নিচে মাটি সরে গিয়ে ধস তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি নাইন্টির মুখে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় পানির প্রবাহ অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করছে বলে উপকূলের বেড়িবাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাঁধের স্বাভাবিক গঠন বিনষ্ট করে এভাবে পাইপ বসানো সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি আমরা নজরে রেখেছি এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাঁধকে শক্তিশালী না করে দুর্বল করার এই প্রবণতা বড় ধরনের দুর্যোগ ডেকে আনতে পারে।
বাঁধের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশ রক্ষায় অবিলম্বে ‘নাইন্টি’ ব্যবহারের ওপর কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প ও টেকসই পানি নিষ্কাশন পদ্ধতি নিশ্চিত করাও এখন সময়ের দাবি।