বেতরাবতী নদীতে অযৌক্তিক বাঁধ নির্মাণ: সাতক্ষীরার ১৪টি ইউনিয়নে বৃষ্টির পানি জমে জনদুর্ভোগ চরমে

সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের চাপড়া এলাকায় বেতরাবতী নদীতে অপরিকল্পিত ও অযৌক্তিকভাবে নির্মিত একটি বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের ফলে পানি বের হওয়ার স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও গবাদিপশুর আশ্রয়স্থল পানিতে তলিয়ে গেছে।

বিশেষ করে ধুলিহর ইউনিয়ন ব্রক্ষরাজপুর, ইউনিয়ন সদর উপজেলার অন্তর্গত ১৪টি ইউনিয়ন বর্তমানে চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঘরবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, বহু মানুষ গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে এবং জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষজন চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি: বাঁধটি অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে

এই জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগের জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হচ্ছে নদীর উপর নির্মিত সেই বাঁধকে। স্থানীয় জনগণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের (ডিসি মহোদয়) কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন — এই বাঁধটি অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে এবং পানি নিষ্কাশনের স্বাভাবিক পথ পুনরুদ্ধার করতে হবে। অন্যথায় জেলার অধিকাংশ এলাকা ভয়াবহ বন্যা ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ

এই পরিস্থিতির সরেজমিন পরিদর্শনে বৃষ্টির মধ্যেও উপস্থিত হন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন:

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সম্মানিত কর্ম পরিষদ সদস্য ও বইকালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শহীদ হাসান

মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুস সবুর

ধলিয়ার ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আব্দুস সালাম

আলিপুর ইউনিয়নের ছাত্র ও মিডিয়া বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ ইমাম হুসাইন

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক মহলের বিভিন্ন প্রতিনিধি যারা ভুক্তভোগী মানুষের দুরবস্থা প্রত্যক্ষ করেন এবং তাঁদের পাশে দাঁড়ান।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংবাদ প্রতিবেদনকারীর বক্তব্য:

মোহাম্মদ ইমাম হুসাইন, আলিপুর ইউনিয়নের মিডিয়া বিভাগের সভাপতি এবং স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে সকাল থেকে মাঠে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। তিনি জানান,

> “যেখানে পানি যাওয়ার পথ নেই, সেখানে নদীর ওপর বাঁধ তৈরি করা মানেই হাজার হাজার মানুষের ঘরে পানি ঢোকানোর বন্দোবস্ত করা। এটি জনগণের বিরুদ্ধে একটি অপরিকল্পিত প্রকল্প। এখনই যদি বাঁধটি না ভাঙা হয়, তাহলে সাতক্ষীরায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হবে।”

জনগণের প্রধান দাবিগুলো:

1. বেতরাবতী নদীর বাঁধটি অবিলম্বে ভেঙে দিতে হবে

2. সাতক্ষীরার জলাবদ্ধ ইউনিয়নগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে

3. ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও পরিবারগুলোকে খাদ্য, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে

4. নদী ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে

5. সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *