শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ভোট দিতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা নির্ভয়ে ভোট দিতে আসবে, আমরা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি।’

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।

উপাচার্য বলেন, ‘ডাকসু তোমরা চেয়েছ; গভীরভাবে প্রত্যাশা করেছ; গণঅভ্যুত্থানের মৌলিক মূল্যবোধগুলোর সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণও। গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য সমন্বিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভয়েস তৈরি করার জন্য এটা জরুরি। গুরুত্বপূর্ণ এসব মূল্যবোধকে তুলে ধরার জন্য তোমাদের অনুষ্ঠান ডাকসু নির্বাচন।’

সারা দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে এবং সবাই শুভকামনা জানাচ্ছেন উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘একটি ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের উত্তরণের প্রক্রিয়াকে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে যে কাজ করছে, তাতে তোমরা তোমাদের ভূমিকা পালন করবে, সেটাই প্রত্যাশা করছি।’

ভোটকেন্দ্রে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (নারী শিক্ষার্থীরা) নির্ভয়ে এসে ভোট দিতে পারবে। সারা দেশ তোমাদের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সেই বিশ্বাসের প্রতিদান তোমরা দেবে।’

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘প্রায় ১১ মাসের ব্যাপক প্রস্তুতির পর সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তুতির শেষভাগে চলে এসেছি। আগামীকাল (৯ সেপ্টেম্বর) সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের বহুল প্রতীক্ষিত নির্বাচন। ভোট গ্রহণ আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে এবং দিনব্যাপী চলবে; ৪টার দিকে ভোট নেওয়া শেষ হবে।’

এবারের ডাকসু নির্বাচন বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক উল্লেখ করে নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এ নির্বাচন ঐতিহাসিক। এবার অনেক কিছু আমরা করেছি, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে ঘটেনি। আমাদের ৮১০টি বুথ থাকবে। প্রায় ৪০ হাজার ভোটার। প্রথমবারের মতো আমরা হল থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয়ভাবে ৮টি কেন্দ্রে এ নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছি। সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা; প্রশিক্ষিত ও নিবেদিতপ্রাণ পোলিং কর্মকর্তা।’

নির্বাচন ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতার দিকে তুলে ধরে ভিসি বলেন, ‘ডাকসুর নির্বাচনী কর্মকর্তারা নিরপেক্ষ, যারা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তারা বিভিন্নজন বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ। তবে সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখছেন। আমরা এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে ভোট গণনা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেব। ব্যাপক সংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত থাকবেন। তারা মনিটরিং করবেন।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচনপ্রক্রিয়া; কিছু প্রার্থী জিতবেন, কিছু প্রার্থী জিতবেন না। জয়-পরাজয় থাকবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিজয়ী ও বিজিত —উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।’

ঢাবি উপাচার্য বলেন, গণতান্ত্রিক একটি প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয়করণ বা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আপনি আপনার ভূমিকা পালন করলেন। বহু বছর আমরা ঐতিহাসিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সেই প্রক্রিয়ায় বিজয়ী ও বিজিতকে ভূমিকা রাখছেন এবং রাখতে হবে। এটিই বিরাট সার্থকতা।’

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *