জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনসহ দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। এসব দাবি পূরণে দলটি নতুন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। এ সময় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো:
অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষণা করা ও এর আইনি ভিত্তি দেওয়া, ঘোষিত জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর ভিত্তিতেই ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচন করা, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের অপরাধের বিচার দৃশ্যমান করা, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সব দোসরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, অবৈধ অস্ত্র, পেশিশক্তি, কালোটাকার প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া এবং দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।

জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য দুটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ স্বাক্ষরের পর দুই মাসের মধ্যে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ও আইনি মর্যাদা বা বৈধতা প্রদান করা; অথবা জুলাই সনদে রাষ্ট্রীয় পলিসি বা ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিষয়গুলো অর্ডিন্যান্স বা নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করা। আর সংবিধানসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন তথা সাংবিধানিক ঘোষণার মাধ্যমে আশু কার্যকর করা। তবে শর্ত হচ্ছে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে কোনো পরিবর্তন-পরিবর্ধন ছাড়াই সেগুলো রেটিফাই (আনুষ্ঠানিক অনুমোদন) করতে সংসদ সদস্যগণ বাধ্য থাকবেন—এ মর্মে সকল দল ও পক্ষের কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা।
এসব দাবি আদায়ে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব মহানগরীতে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা/উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খেলাফত মজলিস।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘সরকার জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের সুস্পষ্ট উদ্যোগ না নিলে পরবর্তীতে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণ ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
দাবি পূরণে খেলাফত মজলিস মাঠে থাকবে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে। সে জন্য তাঁরা এ দাবি করছেন। তবে নতুন এই দাবি ও কর্মসূচি পূরণে সম্মিলিত কোনো কর্মসূচি হবে কি না বা অন্য কোনো দল যুক্ত হবে কি না, সে বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেননি আহমদ আবদুল কাদের।
ক্রাইম বার্তা