রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের বাসায় অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সোমবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের দাবি, দোষীদের শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। তবে রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম শাটডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
সিন্ডিকেট সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ সাংবাদিকদের জানান, শনিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত থাকবে। সংশ্লিষ্ট বডিগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে অচিরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এ সময় সিন্ডিকেট থেকে যথাসময়ে রাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত জানায়। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ হয়, শনিবার কয়েকজন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন।
শনিবার বিকেলে উপ-উপাচার্যের গাড়ি আটকে প্রতীকীভাবে টাকা ছোড়া, বাসভবনের ফটকে তালা ঝোলানো ও পরে জুবেরী ভবনের সামনে ধস্তাধস্তির ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় উপ-উপাচার্য মাঈন উদ্দিন খান, প্রক্টর মাহবুবর রহমান ও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন।
শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে শনিবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে উপাচার্য পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে হলে ফিরে যান।
চলতি বছরের ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল করেছিলেন উপাচার্য। তবে শিক্ষক-কর্মকর্তারা এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁরা চিঠি দিয়ে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
ক্রাইম বার্তা