‘তোর কোম্পানির লোকদের বলবি, চাঁদা না দিলে গাড়িতে এমন প্রতিদিনই আগুন ধরব।’ আলিফ পরিবহনের একটি বাসের সামনে থেকে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ার পর এক অস্ত্রধারী এই বলে হুমকি দেয়। এরপর পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন বাসটির চালক ও হেলপার।
আলিফ পরিবহনের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, আগুন দেওয়ার পর কোম্পানির একজনকে ফোনকলে দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি। নেছার নামের একজন বলেন, ‘…ওগুলোর টাইম নাই, রাস্তায় কোপ খাইব। বডি থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাইব। ওর লগে সমাধান করেন আগে।’
এককালীন ৫ লাখ আর মাসে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল একটি গ্রুপ। কিন্তু চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে মিরপুরের সেনপাড়া এলাকায় আলিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস আটকে দেয় একদল দুর্বৃত্ত। পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করা হয় চালক ও সহকারীকে। বাস থেকে যাত্রীদের জোর করে নামানোর পর আগুন দেওয়া হয়। এ সময় চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে আলিফ পরিবহনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে নেছার ও পিন্টু নামের দুজন চাঁদা চেয়ে আসছিল। স্থানীয় একজন নেতার নাম করে এই চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। আগুন দেওয়ার পর নেছার কল করে আবার প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
সেই ফোনকলের একটি রেকর্ড এসেছে কালবেলার হাতে। এতে নেছারকে বলতে শোনা যায়, ‘ড্রাইভার-হেলপারদের আদর করে দিছে ভাইয়ে। আজকে তো কম হইছে, পিন্টু ভাই কম করছে বৃষ্টি দেইখ্যা। সমাধান না করলে বডি থেকে মাথা আলাদা হয়ে যাইব।’
বাসটির সহকারী জানান, কয়েকজন হাতের ইশারায় বাস থামায়। এরপর তাদের মারধর করে এবং যাত্রীদের জোর করে নামিয়ে দেয়। গাড়ির ভেতরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, আলিফ বাস কোম্পানির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ওই পরিবহনের কিছু কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন। জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
গুলি করার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, আমরা অভিযোগটি খতিয়ে দেখছি।
ক্রাইম বার্তা