দেশের মাথাপিছু জলবায়ু ঋণের পরিমাণ ৮০ ডলার

বাংলাদেশের মাথাপিছু জলবায়ু ঋণ প্রায় ৮০ ডলার, যা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গড়ের চেয়ে তিন গুণেরও বেশি। বাংলাদেশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী নয়, কিন্তু এর পরিণতি ভোগ করছে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম ও চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, জলবায়ু অর্থায়নে বাংলাদেশ প্রতি এক ডলার অনুদানের বিপরীতে দু’ দশমিক সাত ডলার ঋণ নিচ্ছে। এই ঋণের পরিমাণ বহুপক্ষীয় অর্থায়নে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গড়ের প্রায় পাঁচ গুণ।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ বিশ্বের ৫৫টি স্বল্পোন্নত দেশের জন্য একটি ‘জলবায়ু ঝুঁকি ঋণ সূচক’ তৈরি করেছে। এই সূচকের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনায় তাদের ঋণ-ঝুঁকির বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করতে পারবে। বাংলাদেশের এই সংস্থা কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সূচকটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে জলবায়ু আলোচনায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন খান বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্র তিন দশমিক তিন শতাংশের জন্য দায়ী, অথচ এর ৭০ শতাংশ ক্ষতি এসব দেশের ওপর পড়ছে। জলবায়ু তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৯৫ শতাংশই ঋণ এবং মাত্র পাঁচ শতাংশ অনুদান। অর্থাৎ, স্বল্পোন্নত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর সৃষ্টি করা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বোঝা নিজেরাই ঋণ নিয়ে পরিশোধ করছে।’

সভায় তন্ময় সাহা ‘জলবায়ু ঋণ ঝুঁকি সূচক’ উপস্থাপন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার।

জাকির হোসেন খান বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য বাংলাদেশের জনগণ প্রতি বছর সাত বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। অন্যদিকে, বায়ুদূষণের কারণে গড় আয়ু সাত বছর কমে যাচ্ছে।’

এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশকে জলবায়ু বিতর্কে প্রাকৃতিক সুরক্ষার বিষয়টি আনতে হবে। বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন এবং ন্যূনতম পানির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে। এগুলো মোটেও আলোচনা সাপেক্ষ নয়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঋণ মওকুফ করতে হবে। এই বিষয়ে এখনই কাজ শুরু করা দরকার। বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য বহুপক্ষীয় ব্যাংকগুলোকে একটি আর্থ-সলিডারিটি তহবিল তৈরি করতে হবে। দূষণের জন্য কার্বন কর আরোপ করতে হবে। জলবায়ুর জন্য তহবিলের আরো উৎস খুঁজে বের করতে হবে।’

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *