আসন পূর্ণবন্টনে বষৈম্য বাড়বে সাতক্ষীরা মদন ২ আসনে

আল মুতাসিম বিল্লাহ সুমন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে নতুন করে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে, এবং যথারীতি সাতক্ষীরা জেলা আবারও বৈষম্যের শিকার এবং বঞ্চনার শিকার হয়েছে। সাতক্ষীরাবাসী ২০০৮ সালের পূর্বের ৫টি সংসদীয় আসনের সীমানায় ফেরার দাবী করলেও সাতক্ষীরার আসন সামান্য পরিবর্তন করে ৪টিই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সাতক্ষীরার জন্য ৫টি আসনই ছিল বাস্তব সম্মত, কিন্তু সেখানে অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক ভাবে ৪টি আসনে আবারও সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলার সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা জেলার বাস্তব জনসংখ্যা, নির্বাচনী পরিসংখ্যান, ভৌগোলিক অখন্ডতা আর প্রশাসনিক সুবিধা এই চার স্তম্ভেই বাস্তব সম্মত নয়। নির্বাচন কমিশন সদ্য যে গেজেট প্রকাশ করেছে, তাতে দেশের ৩৭টি আসনের সীমানা বদলের কথা বলা হয়েছে; এর মধ্যে সাতক্ষীরাও রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে স্পষ্ট এই পরিবর্তন তড়িঘড়ি করে করা হয়েছে এবং স্থানীয় বাস্তবতার সঙ্গে তা খাপ খাওয়ানো হয়নি।

২০০৮ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন ছিল ৫টি। তখন সাতক্ষীরা-১ (তালা ও কলারোয়া উপজেলা), সাতক্ষীরা-২ (সদর উপজেলা), সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি উপজেলা), সাতক্ষীরা-৪ (কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলা) ও সাতক্ষীরা-৫ (শ্যামনগর উপজেলা) নিয়ে গঠিত ছিল। এটি ছিল জনসংখ্যা, আয়তন ও সীমান্তের অখন্ডতার বিবেচনায় সবচেয়ে সঠিক সংসদীয় আসনের সীমানার বিন্যাস।

তারপর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে নতুন করে সারাদেশে আসন বিন্যাস করে সাতক্ষীরার ৫টি সংসদীয় আসন কমিয়ে ৪টি নির্ধারণ করে। তখন সাতক্ষীরা-১ (তালা ও কলারোয়া উপজেলা), সাতক্ষীরা-২ (সদর উপজেলা), সাতক্ষীরা-৩ আশাশুনি উপজেলা, কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলা), ও সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন) নিয়ে গঠন করা হয়। যেটি ছিল সাতক্ষীরার প্রতি অবিচার ও চরম বৈষম্য। এই বিভাজন জনসংখ্যার হিসেবে সঠিক থাকলেও আয়তন ও সীমান্তের অখন্ডতার বিবেচনায় সঠিক ছিল না।

২০২৫ সালে এসে নতুন সংসদীয় আসনের সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করে সাতক্ষীরা ১ ও ২ অপরিবর্তিত রেখে সাতক্ষীরা-৩ এ (কালিগঞ্জ ও দেবহাটা) উপজেলা ও সাতক্ষীরা-৪ এ (আশাশুনি ও শ্যামনগর) উপজেলাকে নির্ধারণ করা হয়। যেটি ছিল বৃহৎ উপজেলা হিসেবে আশাশুনি ও শ্যামনগরের উপর বৈষম্য ও অন্যায়। তারপর নির্বাচন কমিশন এই দুই এলাকার জনগণের সাথে শুনানি করে সাতক্ষীরার আসন পুনরায় বিন্যাস করে গেজেট প্রকাশ করেছে। এখন সাতক্ষীরার আসন দাড়িঁয়েছে সাতক্ষীরা-১ (তালা ও কলারোয়া উপজেলা), সাতক্ষীরা-২ (সদর ও দেবহাটা উপজেলা), সাতক্ষীরা-৩ আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলা), ও সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলা)। সাতক্ষীরার নতুন এই আসন বিন্যাস খুবই গোলমেলে এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। নতুন এই বিন্যাস সীমান্তের অখন্ডতা, জনসংখ্যা, ভোটার, ও আয়তনের হিসেবে একেবারেই বাস্তব সম্মত নয়।

২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন সমূহের জনসংখ্যা ছিল সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ৫ লাখ ৪০ হাজার, সাতক্ষীরা-২: সদর উপজেলায় ৪ লাখ ১০ হাজার, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি উপজেলায় ২ লাখ ৯২ হাজার, সাতক্ষীরা-৪: কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলায় ৪ লাখ, ও সাতক্ষীরা-৫: শ্যামনগর উপজেলায় ৩ লাখ ৮০ হাজার। তখনকার আসন অনুযায়ী জনসংখ্যা মোটামুটি সমান্তরাল ছিল।

তৎকালীন সময়ে মোট ভোটার ছিল সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ৩,০৩,০৮৯ জন, সাতক্ষীরা-২: সদর উপজেলায় ২,৩৮,৩০৫ জন, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি উপজেলায় ২,৪৫,৬৪৪ জন, সাতক্ষীরা-৪: কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলায় ২,১৬,৩৩২ জন, ও সাতক্ষীরা-৫: শ্যামনগর উপজেলায় ১,৭৫,১৭২ জন।

২০০৮ সালের পর সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন সমূহের ভোটার সংখ্যা ছিল সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ৪,৭২,০৪৩ জন, সাতক্ষীরা-২: সদর উপজেলায় ৪,০০,৬০৮ জন, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ আংশিক উপজেলায় ৪,৩১,৩৮০ জন, ও সাতক্ষীরা-৪: শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ আংশিক উপজেলায় ৪,৪২,১৯৩ জন। তখনকার আসন অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা খুবই সমান্তরাল ও বাস্তবিক ছিল।

২০২৫ সালে নতুন আসন বিন্যাসের পর সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন সমূহের ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ৪,৭২,০৪৩ জন, সাতক্ষীরা-২: সদর ও দেবহাটা উপজেলায় ৫,১৭,৬৯০ জন, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৪,৮৭,০৪৮ জন, ও সাতক্ষীরা-৪: শ্যামনগর উপজেলায় ২,৮৮,৪৬৬ জন। বর্তমান ভোটার হিসেবে সাতক্ষীরার সকল আসনের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এবার আসন ভাগ করার ক্ষেত্রে গড় ভোটার সংখ্যা ধরেছিল ৪ লাখ ২০ হাজার। সেই হিসেবে সাতক্ষীরা-১ ও ৩ এবং বিশেষ করে সাতক্ষীরা-২ আসনের ভোটার সংখ্যা গড় হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৪ আসনের ভোটার সংখ্যা গড় ভোটার হিসেবের চেয়ে অনেক কম।

এবার যদি আমরা আয়তনের দিক থেকে দেখি তবে, ২০০৮ সালের পর সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন সমূহের আয়তন ছিল সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলা ৫৭০.০২ বর্গকিমি, সাতক্ষীরা-২: সদর উপজেলা ৩৯৮.৫৭ বর্গকিমি, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জ আংশিক উপজেলা ৭১৪.৯১ বর্গকিমি, ও সাতক্ষীরা-৪: শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ আংশিক উপজেলা ২১৩৫.১৪ বর্গকিমি। তখনকার আসন অনুযায়ী আয়তনের হিসেবে শ্যামনগর উপজেলার আসনটি অনেক বৃহৎ ছিল।

২০২৫ সালে নতুন আসন বিন্যাসের পর সাতক্ষীরার সংসদীয় আসন সমূহের আয়তন দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরা-১: তালা ও কলারোয়া উপজেলা ৫৭০.০২ বর্গকিমি, সাতক্ষীরা-২: সদর ও দেবহাটা উপজেলা ৫৭১.৭৮ বর্গকিমি, সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলা ৭০৮.৫৯ বর্গকিমি, ও সাতক্ষীরা-৪: শ্যামনগর একক উপজেলা ১৯৬৮.২৪ বর্গকিমি। এখনকার হিসেবে সাতক্ষীরা-২ আসনটি প্রশাসনিক ভাবে বেশ বড় হয়ে গেছে। কারণ এই আসনের অধীনে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা শহর, পৌরসভা, সদরের ১৪টি ইউনিয়ন ও দেবহাটার ৫টি ইউনিয়নসহ মোট ১টি পৌরসভা ও ১৯টি ইউনিয়ন। আর সাতক্ষীরা-৪ আসনে রয়েছে একটি কম জনবহুল পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন। একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে সাতক্ষীরা-২ এর বিশাল এলাকা, প্রশাসনিক অঞ্চল ও জনসংখ্যার সেবা প্রদান করা খুবই কষ্টকর হবে। উল্লেখ্য, শ্যামনগর উপজেলার আয়তন বিশাল হলেও সেখানের আবাসিক এলাকার আয়তন ৮৮৩ বর্গকিমি এবং বাকি জায়গাগুলো সুন্দরবনের বনাঞ্চল। অন্য দিকে তালা-কলারোয়া মিলে যুক্ত হয়েছে ১টি পৌরসভা ও ২৪টি ইউনিয়ন, আশাশুনি-কালিগঞ্জ মিলে যুক্ত হয়েছে ২৩টি ইউনিয়ন। যেগুলিও প্রশাসনিক ভাবে শ্যামনগরের চেয়ে অনেক বড়। জনসংখ্যার দিক থেকে সাতক্ষীরা-২ আসনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬,৫৫,৯৭৮ জন এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৬৫,৯৭০ জন। যেটি জনসংখ্যার বিচারে প্রায় দ্বিগুণ।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময়কার বাস্তবতায় সাতক্ষীরার ৪টি আসনের গঠন কাঠামোতে সবচেয়ে বড় ত্রুটি ছিল কালিগঞ্জকে দুই আসনে কেটে দিয়ে এক অংশ সাতক্ষীরা-৩, অন্য অংশ সাতক্ষীরা-৪ এ যুক্ত করা। ফলে এক উপজেলা দুই সংসদ-সদস্যের তত্ত্বাবধানে পড়ে প্রশাসনিক সমন্বয়, উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাজেট বণ্টন সবখানেই অস্পষ্টতা সৃষ্টি হয়েছিল। তারপর আশাশুনি ও শ্যামনগর একত্রিত করে সাতক্ষীরা-৪ গঠন ছিল আরেকটি ভুল। যেখানে দুই উপজেলার উপর বৈষম্য হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে সদরের সাথে দেবহাটা যুক্ত করায় ভুলের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

সদর উপজেলা জেলা প্রশাসনের মূল কেন্দ্র। এখানকার সমস্যাগুলো শহরমুখী-যানজট, নগর পরিকল্পনা, পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার আধুনিকীকরণ। অন্যদিকে দেবহাটা গ্রামীণ-সীমান্ত ঘেঁষা-এখানকার মূল সমস্যা নদী ভাঙন, লবণাক্ততা, চাষাবাদ, সীমান্ত বাণিজ্য ও অবকাঠামো ঘাটতি। একই এমপির অধীনে এই দুই বিপরীত প্রকৃতির সমস্যা সামলানো অবাস্তব হয়ে যাবে। ফলে যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা শহর বনাম গ্রাম দ্বন্দ্বে আটকে যাবে।

সদরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে “জেলার আসন”হিসেবে সদর কেন্দ্রিক সংসদীয় এলাকা নিয়ে গর্ববোধ করেছে। দেবহাটার মানুষও তাদের নিজস্ব সমস্যার জন্য আলাদা মনোযোগ আশা করে। এখন দুটি ভিন্ন বাস্তবতা এক আসনে মিশে যাওয়ায় কেউই সন্তুষ্ট হবে না। বরং পরিচয় সংকট তৈরি হবে-“শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন” বনাম “গ্রামীণ সীমান্ত সমস্যা”র দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে।

সরকারি বাজেট ও প্রকল্প সাধারণত ভোটারের ঘনত্ব ও রাজনৈতিক চাপে বণ্টিত হয়। সদর উপজেলা ঘনবসতিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকল্পগুলো সেদিকেই কেন্দ্রীভূত হবে। ফলস্বরূপ, দেবহাটার মতো ছোট উপজেলা বঞ্চনার শিকার হবে। এতে স্থানীয় ক্ষোভ বাড়বে, রাজনৈতিক অস্থিরতাও তৈরি হতে পারে।

দেবহাটা উপকূল ও সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা হওয়ায় এখানে ঘূর্ণিঝড়, নদী ভাঙন, লবণাক্ততার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়মিত আঘাত হানে। সদর উপজেলা এসব দুর্যোগ থেকে তুলনামূলক মুক্ত। এই ভিন্ন ভৌগোলিক বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে এক আসনে ফেলে দেওয়া মানে দুর্যোগ প্রবণ এলাকার সমস্যাকে হালকা ভাবে নেওয়া।

এ ধরনের ভুল বিন্যাস স্থানীয় প্রতিনিধিত্বকে দুর্বল করবে। একজন সংসদ সদস্যকে সদর ও দেবহাটার একেবারে ভিন্ন ভিন্ন দাবি সামলাতে হবে। জেলা শহরের মতো একটি বিশাল এলাকার দায়িত্ব কর্তব্য সামলে একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে গ্রামের দিকে নজর দেয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। এতে নির্বাচনী প্রতিশ্রতি পূরণ কঠিন হয়ে পড়বে।

রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রেও বিভ্রান্তি তৈরি হবে। সদর শহরের ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারণা ও প্রার্থী মনোনয়নে সেদিকেই নজর দেবে। দেবহাটা কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির হয়ে যাবে। এতে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের সমান সুযোগ নষ্ট হবে।

সদর উপজেলাকে একক আসন হিসেবেই রাখা উচিত ছিল। জেলার প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ায় এটির নিজস্ব সংসদীয় আসন থাকা যৌক্তিক। দেবহাটাকে আশাশুনির সাথে যুক্ত করা যেতো, কারণ ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় দেবহাটা ও আশাশুনি অনেক বেশি কাছাকাছি। দেবহাটা ও আশাশুনি একত্রিত করে একটি আসন করলে জনসংখ্যা, ভোটার, ও আয়তনের দিক থেকে একটি ভারসাম্য বজায় থাকতো। দুই উপজেলাই নদী–খাল-লবণাক্ততার সমস্যায় ভুগে এবং সীমান্ত ও উপকূল ঘেঁষা হওয়ায় দুর্যোগ প্রবণ। তাই দেবহাটাকে আশাশুনির সঙ্গে একত্রে রাখলে প্রতিনিধিত্ব ও উন্নয়ন পরিকল্পনা অনেক বেশি কার্যকর হতো।

সাতক্ষীরা-২ আসনে সদর ও দেবহাটা উপজেলাকে একত্র করার সিদ্ধান্ত নিছক একটি কারিগরি ভুল নয়, বরং একটি গণতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক বিপর্যয়। এই বিন্যাস জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে, সাংবিধানিক সমতার নীতি ভঙ্গ করে এবং স্থানীয় উন্নয়নের ভারসাম্য নষ্ট করবে। আজকের দিনে যখন জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, তখন এ ধরনের অযৌক্তিক সীমানা নির্ধারণ ভবিষ্যতে অসন্তোষ, বৈষম্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দেবে।

অতএব, নির্বাচন কমিশনের উচিত এই ভুল সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত বের হয়ে আসা এবং দ্রুত সাতক্ষীরার আসন নতুন করে সংশোধন করা এবং সাতক্ষীরার পূর্বের ৫টি আসনে ফেরত যাওয়া। কারণ যে দিক থেকেই বিবেচনা করা হোক না কেন সাতক্ষীরা জেলার ক্ষেত্রে ৫টি আসনই বাস্তব সম্মত ও যৌক্তিক। সাতক্ষীরার মানুষ প্রত্যাশা করে তাদের ভৌগোলিক বাস্তবতা, জনসংখ্যা, দুর্যোগ প্রবণতা এবং প্রশাসনিক প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে একটি ন্যায্য আসন বিন্যাস করা হবে।

লেখক: আল মুতাসিম বিল্লাহ সুমন, রাজারবাগান, সাতক্ষীরা।

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *