সাতক্ষীরা: কয়েকদিনের টানা মুষলধারায় বৃষ্টিপাতে জেলার অধিকাংশ এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার হয়েছে। জনবসতি, মৎস্যঘের, সবজি ক্ষেত জলমগ্ন ও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ী বাঁধ হুমকীর মুখে পড়েছে। এতে করে জনজীবন বিপর্যয় হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় মোট ২৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হয়েছে ১০২ মিলিমিটার। অতিবৃষ্টির কারণে পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরায় বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে ভোর থেকেই ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। এরমধ্যেও নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের কাজে বের হতে পারেন নি। দোকানপাটসহ হোটেল, রেস্টুরেন্টগুলোতে মানুষের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। বিশেষ করে জেলার নিচু এলাকার বসতবাড়ি, রান্নাঘর, গোয়ালঘরে পানি উঠেছে।
চলাচলের রাস্তা তলিয়ে যাওয়াতে যাতয়াত ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ডুবে গেছে পানির টিউবওয়েল। ফলে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। নাগরিক জীবন এখন মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে।
বিশেষ করে উপকূলেল উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, দেবহাটা সহ আশেপাশের উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি বৃষ্টির পানিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। মাছের ঘেরগুলোর বাঁধ বহু স্থানে তলিয়ে গেছে, কিছু কিছু এলাকায় ডুবুডুবু করছে। ঘের মালিকরা ঘের রক্ষা করতে বাঁধের উপর দিয়ে নেটজাল টানিয়ে শেষ রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাসিন্দা এড. শহিদুল ইসলাম জানান, বেতনা নদী খননের কাজ শেষ না হওয়ায় চাপড়ার কাছ বাঁধ দিয়ে নদী প্রবাহ বন্ধ রাখার কারণে বুধহাটা ইউনিয়নসহ পাশের এলাকার বৃষ্টির পানি নদীতে যেতে পারছেনা। ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আবাসিক এলাকা, ফসলের ক্ষেত, মৎস্যঘের, পুকুর পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছে। এলাকার মৎস্য ঘেরগুলো খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলার মনিরুল ইসলাম জানান, পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া উপকূলের নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেঁড়িবাধ ঝুঁকিতে রয়েছে। বাড়তি পানির চাপে দূর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে দূর্ভোগের শেষ থাকবে না।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে মৎস্যঘের প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেসব এলাকার বেড়ি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলো রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
ক্রাইম বার্তা