জেলা প্রশাসক বরাবর স্থানীয়দের অভিযোগ সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ পুকুরে গোবর ফেলে মাছ চাষ: সূপেয় পানির আধার নষ্ট

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ  সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় পুকুর খাল উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের পুকুর পাড়ে ২টি ঘাটলা নির্মান করা হয়। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয়দের সুপেয় এবং গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ করা। কিন্তু সেই পুকুর এখন মাছ চাষের জন্য ইজারা দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে এলজিইডি সাতক্ষীরা।

স্থানীয়রা জানান, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল কলেজের শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীদের জন্য সুপেয় ও গৃহস্থালি কাজের জন্য পানি সরবরাহ, ভূ—গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ, ভূ—উপরিস্থ পানি ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। মাছ চাষ করলে পুকুরগুলো পানীয় জল সরবরাহের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

মাছ চাষের জন্য কেন পুকুরগুলো ইজারা দেওয়া হলো? জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল হাশেম বলেন, মাছ চাষ করার কোন অনুমতি নেই। তবে হোস্টেলে ছাত্রদের খাওয়ার জন্য মাছ চাষ করতে পারে। তবে
আগামিতে আর মাছ চাষ করতে দেব না। পুকুরে গোবর দেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

স্থানীয় মাহমুদ হোসেন, নিজাম উদ্দীন, সোহরাব হোসেন জানান, পুকুরটি পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রায় দিন মাছের খাবার হিসেবে পুকুরে বস্তা বস্তা গোবর ফেলা হচ্ছে। পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ২৮ জুলাই রাত পর্যন্ত পুকুর পাড়ে কয়েক বস্থা গোবরের স্তুত পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
এনিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বার বার দৃষ্টিআকর্ষণ করার পরও কোন ব্যবস্থা না নেওয়াতে ২৮ জুলাই প্রতিকার চেয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাষক বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছে ভুক্ত ভোগী পরিবার। লিখিত অভিযোগে তারা জানান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ চত্বরে অবস্থিত পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত ছিল এবং এটি এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে পরিচিত। জনগুরুত্ব বিবেচনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে শর্ত সাপেক্ষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পুকুরটি সংস্কার পূর্ব—পশ্চিম পাড়ে দু’টি ঘাটলা নির্মাণ করে দেয়। কিন্তু বর্তমানে উক্ত পুকুরে মাছ চাষের নামে পুকুরে বস্তা বস্তা গোবর দিচ্ছে। এছাড়া নিয়মিতভাবে মুরগির বিষ্ঠা ও ফেলা হচ্ছে, যা পুকুরের পানি দুষিত করছে এবং আশপাশের পরিবেশে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই দূষণের কারণে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। প্রাকৃতিক জলাধার বিবেচনায় এলাকাবাসী অনেকেই রান্নার কাজে এ পুকুরের পানি ড্রাম ভরে নিয়ে যেত, যা এখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *