ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ধর্ষক গ্রেপ্তার

রংপুর  কারমাইকেল কলেজের এক ছাত্রী ধর্ষণের স্থিরচিত্র এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় মূল অপরাধী ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার রাতে রংপুর নগরীর লালবাগ কলেজপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার পিবিআই রংপুর অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই’র বিভাগীয় পুলিশ সুপার মজিদ আলী জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দক্ষিন ঝুনাগাছ চাপানী গ্রামের মোঃ শফিয়ার রহমান এর পুত্র নূর মোহাম্মদ (২৩)। মামলার ভিকটিম রংপুর পুলিশ লাইন্স কলেজে পড়াশুনা করা অবস্থায় একই গ্রামের গ্রেফতারকৃত নূর মোহাম্মদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেম হয়। এক পর্যায়ে ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রংপুরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল ধর্ষণ করে মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলে এবং ভিডিও করে রাখে ধর্ষক নূর মোহাম্মদ। পরবর্তীতে ওই ভিডিও এবং ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আসামী নূর মোহাম্মদ ছাত্রীটির ওপর মানসিক অত্যাচার করত এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করতো। ভিকটিম এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে নূর মোহাম্মদের কু-কর্মের প্রতিবাদ জানিয়ে তার অনৈতিক প্রস্তাবে আর যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ওই ধর্ষক। অশ্লীল কিছু ছবি ভিকটিমের পরিচিত রুমমেটদের ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে পাঠায়। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটি বাদী হয়ে রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করে। মামলা দায়ের পর পিবিআই নূর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি পেন ড্রাইভ, তিনটি মেমোরী কার্ড, চারটি মোবাইল সীমকার্ড উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত আলামতের মধ্যে পেন ড্রাইভ এবং মেমোরী কার্ডে ধর্ষণের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র পাওয়া গেছে। পিবিআই রংপুর জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, গ্রেপ্তারকৃত নূর মোহাম্মদের কাছ থেকে ঘটনা সংশ্লিষ্ট সকল আলামত জব্দ করা হয়েছে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আসামী নূর মোহাম্মদ একজন লম্পট প্রকৃতির। সে একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে। এ ধরনের আরো কোন মেয়ে তার দ্বারা ক্ষতির শিকার হয়েছে কি না সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছে পিবিআই।

Please follow and like us:

Check Also

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তান নিয়ে ট্রেনের নিচে নারীর ঝাঁপ: মারা যান মা-ছেলে

হাজীগঞ্জে এক বছরের সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন মা তাহমিনা (২৩)। এতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।