নাটোরে শিক্ষিত হয়েও পরিতোষ প্রতিবন্ধিতার কারণে চাকুরী পাচ্ছেনা

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে হিসাব বিজ্ঞানে ডিগ্রী পাস করেও শারিরীক প্রতিবন্ধিতার খারণে পরিতোষ কুমারের চাকুরী জুটছেনা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মেধার বিকাশ ঘটলেও শরীরের উচ্চতা স্বাভাবিকভাবে না বাড়ায় সমাজে পরিতোষ একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী হিসেবে পরিচিত। শারীরিক প্রতিবন্ধী পরিতোষ কুমারের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার বনকুড়াইল গ্রামে। পরিতোষ তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র তখন বাবা জ্যোতিষ চন্দ্র মারা গেলে ভিটে ছাড়া তাদের আর কিছুই ছিলনা। ভাই-বোনরাও তখন অনেক ছোট। কষ্ট করে তার মা গ্রামের একটি স্কুলে তাকে পড়ালেখা করান। পরে ২০০৯ সালে সে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ পেয়ে সিংড়ার রহমত ইকবাল ডিগ্রি কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হয়। লেখাপড়ায় ভালো করায় পরিতোষ কলেজ কর্র্তৃপক্ষের নজরে চলে আসে। তার আগ্রহ দেখে কলেজের অধ্যক্ষ মুনসুর রহমান মুকুলের আন্তরিকতায় পরিতোষের পড়ালেখার যাবতীয় ব্যয়ভার গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই কলেজ থেকে ২০১১ সালে সে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪.৯০ পেয়ে পাশ করে। যোগ্যতার পরেও পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম কিনেও ভর্তি পরীক্ষা দিতে পেরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে অনার্সে ভর্তি হয়। এসময় আার্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় অনার্স পড়া বন্ধ হওয়ার অবস্থায় হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আশীষ কুমার স্যান্যালের আন্তরিকতায় সে আবারও ভালভাবে পড়াশুনা শুরু করে। কলেজ হোস্টেলেও তার খরচ অর্ধেক কমিয়ে দেয়া হয়। মায়ের পাঠানো টাকা আর টিউশনি করে নিজের অন্যান্য খরচ চালিয়ে নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজ থেকে পরিতোষ কুমার হিসাব বিজ্ঞানে ¯œাতক ডিগ্রী নিয়ে চাকুরী খোঁজার পাশাপাশি আবারও বিবিএ অনার্সে ভর্তি হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানেও সে প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্বীর্ণ হয়েছে। একজন ¯œাতক ডিগ্রীধারী হয়েও প্রতিবন্ধী পরিতোষ এখন চাকুরীর জন্য ঘুরে ফিরছে। বেশ কিছু লোনের বোঝা ফেলে রেখে তার তিন ভাই তাকে আর মাকে ফেলে রেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। গ্রামের বাড়িতে মা অসুস্থ। তার মায়ের ঘাম ঝড়ানো টাকায় লেখাপড়া শিখেও শুধু প্রতিবন্ধিতার কারণেই চাকুরী না পেয়ে মায়ের মুখে সে হাসি ফোটাতে পারছে না এাঁ তাকে খুব পীড়া দেয়। পরিতোষের এখন শুধুই চাওয়া তার শিক্ষাগত যোগ্যতায় একটি চাকুরী। সেও সমাজে অন্য শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সাহায্য করতে চায়। পরিতোষ আরও দশজন মানুষের মত চলতে-ফিরতে আর কাজ করে অভাগী মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চায়। পরিতোষ প্রতিবন্ধীতাকে তার ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানিয়ে সমাজে মাতা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়।

Please follow and like us:

Check Also

সাতক্ষীরায় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার,হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

সাতক্ষীরায় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ১১তম বছর পূর্তি উপলক্ষে র‌্যালি, কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।