আফগানিস্তানের ২০০ জনের বেশি সৈন্য ও যোদ্ধা নিহত: পাকিস্তান

রাতভর আফগানিস্তান সীমান্তে ব্যাপক সংঘর্ষের পর হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, তাদের সেনাদের হামলায় আফগান তালেবানের ২০০ জনের বেশি সৈন্য ও অন্যান্য যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এছাড়া আফগানদের হামলায় নিজেদের ২৩ সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

গতকাল শনিবার রাতে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রোববার (১২ অক্টোবর) পাক সেনাবাহিনীর মিডিং উইং বলেছে, “আফগানিস্তান সীমান্তে রাতভর সংঘর্ষে আমাদের ২৩ সেনা নিহত ২৯ জন আহত হয়েছেন।” সকালে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছিলেন, তাদের হামলায় ৫৮ পাক সেনা নিহত হয়েছেন। আর নিজেদের ৯ সেনা প্রাণ হারান বলে জানান তিনি।

তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের হামলায় দুই শতাধিক আফগান যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তারা বলেছে, “বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে দেখা গেছে, রাতের হামলায় তালেবান ও অন্যান্য ২০০ জনের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছে।”

এছাড়া তালেবান সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে পাক সেনাবাহিনী বলেছে, “তালেবানের অবকাঠামো, সেনা পোস্ট, ক্যাম্প, হেডকোয়ার্টার এবং সন্ত্রাসীদের সাপোর্ট নেটওয়ার্কের ক্ষয়ক্ষতি ছিল ব্যাপক। যার সবই হয়েছে সীমান্ত ও কৌশলগত অঞ্চলে।”

রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব ও কাতার। এ নিয়ে সৌদি আরব বলেছে, “পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সৌদি আরব। আমরা উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার অনুরোধ জানাই। সৌদি মনে করে, এতে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং উত্তেজনা প্রশমিত হবে।”

দেশটি আরও বলেছে, “শান্তি ও স্থিতিশীলতার আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সব প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায় সৌদি আরব। ভাতৃপ্রতীম দেশ আাফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা এমন পথে হোক যেটি শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, সেটিতে সৌদির অব্যাহত সমর্থন থাকবে।

অপরদিকে কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, উভয়পক্ষকে আমরা আলোচনা, কূটনীতি এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া এমন পথে দ্বন্দ্ব নিরসন করুন যেটি উত্তেজনা প্রশমন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

সৌদির মতো কাতারও পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে ভাতৃপ্রতীম দেশ হিসেবে অভিহিত করেছে। স্থায়ী শান্তি আনার ক্ষেত্রে কাতার অবদান রাখতে প্রস্তুত আছে বলেও জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সূত্র: আলজাজিরা

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *