চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎ: তালায় সোলাইমানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ! (পর্ব–১)

শামীম খান, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি
চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সুখদেবপুর গ্রামের মোঃ সালাম সরদারের ছেলে সোলাইমান সরদার এর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সোলাইমান দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন।
প্রথম ভুক্তভোগী ইমন মৃধা, তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের আমিনুল মৃধার ছেলে। ইমন জানান, সোলাইমান সরদারের ফেসবুক আইডিতে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে তিনি যোগাযোগ করেন। পরে সোলাইমান জানান, তিনি একটি এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি প্রদান করে থাকেন, এবং সেখানে চাকরি পেতে হলে টাকা দিতে হবে।
চাকরির আশায় ইমন ৮ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরে সোলাইমান তাঁকে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ইমন ঢাকায় পৌঁছানোর পর সোলাইমান ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেন। টাকা ফেরত চাইলে ইমনকে হুমকি দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় ভুক্তভোগী মোহাম্মদ তইবুল হাসান রনি, পিতা: মাহবুব সরদার, গ্রাম: হাজরাকাটি — অভিযোগ করেন, সোলাইমান একইভাবে চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন, কিন্তু কোনো চাকরি বা টাকা ফেরত দেননি।
তৃতীয় ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ শেখ, বাড়ি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর। তিনি তার ফেসবুকে স্টাটাস দিয়ে বলেন,
“তিনি একজন প্রতারক—চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করে থাকেন। সে আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে, কিন্তু এখন তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতারণার মাধ্যমে সোলাইমান ইতোমধ্যে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সোলাইমান সরদারের মোবাইলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে সোলাইমান সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমার তালায় একটা এজেন্সি সেন্টার ছিলো। আমি ইমনসহ অনেকের কাছ থেকে এত টাকা নিইনি। আমি শুধু এজেন্সির খরচ নেই। আমার হাত ধরে অনেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বড় বড় এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ অনেক জায়গায় চাকরি পেয়েছে।”
তাঁর অফিসের অবস্থান জানতে চাইলে সোলাইমান জানান, “আমার নির্দিষ্ট অফিস নেই। আমি ঢাকার অনেক অফিসের আন্ডারে কাজ করি।”
সচেতন মহলের প্রশ্ন: আর দাবি—বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে কেন দিতে হবে টাকা? তারা বলেন, চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া আইনবিরোধী ও নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। প্রশাসনের উচিত এই ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *