বেগম জিয়াকে সবসময় ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবেই চিনেছি: শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, শৈশব থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে যেভাবে দেখেছি, তাতে তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিচয় হলো– দেশের স্বার্থে আপসহীন অবস্থান। বিএনপি চেয়ারপারসনের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নম্রতা, ধৈর্য এবং দৃঢ়তা– এই তিনটি গুণের সমন্বয় দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রোববার (৩০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন।

শিবির সভাপতি লিখেন, ১/১১ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত বেগম জিয়া অবিচার ও নির্যাতনের মুখে মাথা নত না করে যে অবস্থান ধরে রেখেছেন, তা তাকে জাতীয় রাজনীতিতে এক অনন্য নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনীতির তিনটি দিক– জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান এবং পার্বত্য অঞ্চলে কৌশলী ভূমিকা– তাকে সবসময় মুগ্ধ করেছে। ছাত্র সংগঠক হিসেবে তিনি মনে করেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা দেশের রাজনীতিতে বিভাজন নয়, বরং ঐক্যের পথ দেখিয়েছিলেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে দলমত-নির্বিশেষে মানুষ যে দোয়া ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছে, তা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তার মতে, বর্তমান পরিবর্তিত সময়ে দেশ পরিচালনা, জাতীয় সিদ্ধান্ত এবং রাজনৈতিক দিকনির্দেশনায় বেগম জিয়ার অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ আগামী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক প্রত্যাশা তুলে ধরে শিবির সভাপতি বলেন, তারা কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে নয়, বরং যাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদী আচরণ ও আধিপত্যবাদী শক্তির কাছে মাথা নত করার প্রবণতা দেখা যায়, নতুন প্রজন্ম তাদের প্রত্যাখ্যান করে। তিনি মনে করেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসনের আদর্শকে ধরে রাখতে পারলে দলটি টিকে থাকবে, অন্যথায় সেই আদর্শ থেকে সরে গেলে সংগঠন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে।

বাম রাজনৈতিক শক্তি এবং কথিত বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকায় সন্দেহ প্রকাশ করে শিবির সভাপতি বলেন, এরা কখনো দীর্ঘমেয়াদে দেশের উপকার করেনি, বরং স্বার্থসিদ্ধি, বিভাজন এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামবিদ্বেষই বেশি দেখা গেছে। এ ধরনের শক্তির ওপর নির্ভরতা যেকোনো রাজনৈতিক সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দেশের রাজনীতি নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জাহিদুল ইসলাম বলেন, অতীতে কারাবন্দি অবস্থায় তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দমন-পীড়নের শিকার বিএনপি এবং ছাত্রশিবির-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মীকে দেখেছেন। তার দাবি, ৩৬ জুলাই-পরবর্তী সময়ে বিএনপি যে নীতি নিয়েছে, তা সেই দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের স্বার্থে সহনশীলতা, আদর্শিক অটলতা এবং জাতীয় ঐকমত্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।

About news-admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *