সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকার চিহিৃত মাদক সেবী ও কারবারি এবং জালিয়াতি চক্রের হোতা রবিউল ইসলাম রবি ওরফে রবিউল ভেন্ডারের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী শেখ ইনা পারভীন চন্দনার বসত ভিটার জমি জাল হেবা দলিল সৃষ্টি করে দখলে নেওয়ার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তালা উপজেলার শিবপুর গ্রামের মো, মহিউদ্দিন শেখের মেয়ে ও রবিউল ভেন্ডারের ছোট স্ত্রী শেখ ইনা পারভীন চন্দনা এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করাকালে সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকার ভাড়াবাসায় থাকাকালিন মৃত রমজান ভেন্ডারের ছেলে মো. রবিউল ইসলাম রবি ওরফে রবিউল ভেন্ডারের সাথে তার পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের সম্মতিতে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে ২০১৬ সালে রবিউলের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তার রেজিঃ বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরে তিনি জানতে পারেন রবিউল একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ি ও মাদক সেবী এবং তিনি রবিউলের চার নাম্বর স্ত্রী। এছাড়া রবি নারীদিয়ে দেহ ব্যাবসা করানো, জাল স্টাম্পের ব্যবসা, লোকদেরকে নারীদিয়ে ফুসলিয়ে এনে ঘরে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
শেখ ইনা পারভীন চন্দনা বলেন, স্বামীর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয় জানার পর তার সাথে তিনি সংসার করতে না চাইলে রবিউল ওয়ারেশ সূত্রে মায়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত কাটিয়া মাঠপাড়া এলাকায় ২.৫০ শতক জমি তার (চন্দনা) নামে ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তারিখে রেজিঃ হেবা দলিল করে দেয়। পরে তিনি বাবার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা এনে ওই জমির উপর একতলা একটি বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে বসবাস শুরু করেন। রবি সংসার খরচ বাবদ প্রতি মাসে তাকে ১০ হাজার করে টাকা দিত। কিন্তু তার সাথে ঘরসাংসার করাকালে কিছুদিন না যেতেই সাংসারিক খুটিনাটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ঝগড়া বিরোধ করে সে তাকে বেধড়ক মারপিট করা শুরু করে। একপর্যায় রবিউল বাইরের লোক নিয়ে এসে বাসায় বসে মাদক সেবন করা শুরু করে দেয়। এসময় রবি তার সাথে আসা অন্য পুরুষের সঙ্গে তাকে (স্ত্রী) সঙ্গ দেওয়ার প্রস্তাবও দেয়। তার এই হিন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তার মাসিক খরচের টাকা বন্ধ করে দেয়।
গৃহবধূ চন্দনা অভিযোগ করে বলেন, খাওয়া পরনের টাকা চাইলে রবি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতঃ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভিতি ও ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি ধামকি প্রদান শুরু করে। গত ৫ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে রবিউলের কাছে সংসার খরচের টাকা চাইলে সে তাকে কোন প্রকার টাকা দিতে পারবে না মর্মে অকত্য ভাষায় গালিগালাজ করে বাসা থেকে চলে যায়। এঘটনা পর আমি রবিউলের নামে থানায় নারী নির্যাতনের মামলা করলে গত ৯ নভেম্বর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা হাজতে পাঠায়। পরে জেল থেকে মোবাইলে সে আমার সাথে যোগাযোগ করে ভুল স্বীকার করে ভাল হওয়ার সুযোগ চাইলে আমি তাকে নিজের জিম্মায় জামিনে বাইরে বের করে আনি। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে সে আমাকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। বাড়ি না ছাড়লে বাড়িতে মাদক তুলে দিয়ে মিথ্যে মামলায় ফাসানোর পাশপাশি পরপুরুষ দিয়ে আমার ক্ষতিসাধন করবে মর্মে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এছাড়া রবিউল লোক মারফত জানায় ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর আমি নাকি বাড়ির জমি তার নামে হেবা দলিল করে দিয়েছি এবং দেন মোহরের ৫ লাখ টাকা সে পরিশোধ করে দিয়েছে। রবিউল জাল কাগজ তৈরী করে এসব করেছে বলে আমার মনে হয়। তার জাল কাগজের বিরুদ্ধে আমি আদালতে মামলা করলে বিচারক পিবিআইতে তদন্ত দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে বহুতল বাড়িতে ভেন্ডার রবি তারে বড় স্ত্রীর সাথে থাকছে। ওই বাড়িতে সে এখনো প্রকাশ্যে মাদক সেবন, বিক্রি ও বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার নামে চারটি মাদকের মামলা (জিআর-১২২/২০, ৯১৯/২১, ৩৪৮/২২,৪৩৫/২৫) ও একটি জালিয়াতি মামলা (জিআর-৪৪২/২১) রয়েছে। এসব মামলায় আটক হয়ে জেল খাটলেও এখনো থামেনি মাদকের কারবার, নারীদিয়ে দেহ ব্যাবসা. জাল জালিয়াতিসহ সব ধরণের অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকান্ড।
তিনি মাদকসেবী ও নারীলোভী ভেন্ডার রবিউলের অত্যাচর, নির্যাতন ও বাড়ি ছাড়ার হুমকি ধামকি থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে নিজের বাড়িতে যাতে শান্তিপূর্ন পরিবেশে বসবাস করতে পারেন তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ক্রাইম বার্তা