যুদ্ধাপরাধ মামলা থেকে বাদ দেয়ার আশ্বাসে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ   ঢাকা: হবিগঞ্জে যুদ্ধাপরাধ মামলা থেকে নাম বাদ দেয়ার কথা বলে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
আজ রোববার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার মামদপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়ের গোলাপের স্ত্রী মিনারা বেগম সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, তার স্বামী আবুল খায়ের গোলাপ দীর্ঘ ২৫ বছর নবীগঞ্জের ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই ইউনিয়নের তিনবারের চেয়ারম্যান তিনি। তারই চাচাতো ভাই শাহনেওয়াজ এক সময় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে তার স্বামী আবুল খায়ের গোলাপ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার স্বামীর কাছে শাহনেওয়াজ বারবার পরাজিত হন। সে থেকে শাহনেওয়াজ গোলাপের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন। শেষ পর্যন্ত শাহনেওয়াজ তার স্বামীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা সাজান। ওই মামলায় তার স্বামী বর্তমানে জেলে রয়েছেন।
মিনারা বলেন, ‘আমার স্বামীর নাম ওই মামলা থেকে বাদ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে শাহনেওয়াজের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ আমিন রাসেল আমাদের পরিবার থেকে ৪৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এই মামলাটি দিয়ে শাহনেওয়াজের পরিবার এবং মামলার বাদী ও সাক্ষীরা স্থানীয় মানুষদের নানাভাবে হয়রানী করছে।’
মিনারা বলেন, ‘আমার স্বামী ১৯৭১ সালে দিনারপুর হাইস্কুল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এখনো ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আছেন। তিনি নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের নির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি জেলা যুবলীগেরও সদস্য ছিলেন।’
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ‘গোলাপকে গ্রেফতারের পর শাহনেওয়াজ ও তার ছেলে রাসেল আমাদেরকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। এর মূল কারণ ছিলো আমাদের পরিবার থেকে অর্থ আত্মসাৎ করা। বছরখানেক আগে রাসেল জানায়, টাকা দিলে এই মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন আমার স্বামী। যে কারণে আমি আমার সারা জীবনের সঞ্চিত সম্পদ স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে এবং আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে মোট ৪৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা রাসেলকে দেই। ওই টাকা নিয়ে এখন নানা তালবাহানা করছে। টাকা ফেরত চাইলে বলে ওই মামলা সাজাতে আমার অনেক টাকা খরচা হয়েছে। সে বাবদ টাকা নিয়েছি। আর এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যে-ই কথা বলছেন তাদেরকেই নানাভাবে হয়রানী করছেন।’
সম্প্রতি শাহনেওয়াজ ও তার ছেলের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় ছয় গ্রামের বাসিন্দারা এলাকায় একটি সমাবেশ করেন। তারা আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরৎ চেয়েছেন। এ নিয়েও স্থানীয় বাসিন্দাদের নানাভাবে হয়রানী করছে শাহনেওয়াজ ও তার ছেলে। মিনারা ওই টাকা ফেরৎ চেয়েছেন।

Please follow and like us:

Check Also

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত ইইউ

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার ইউরোপীয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।