কবি আল মাহমুদের কফিন শহীদ মিনার-ঢাবিতে নিতে দেয়া হয়নি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ : বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি, কবি আল মাহমুদকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। একইসঙ্গে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের অনুমতি দেয়নি সরকার। এমন অভিযোগ কবির পরিবার ও তার ভক্তদের।
জানা গেছে, শুক্রবার ইবনে সিনা হাসপাতালে মারা যাবার পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে কবি আল মাহমুদকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরাস্থানে দাফন করার ইচ্ছে ব্যক্ত করা হয়েছে। একইসাথে তার ভক্ত ও শুভাকাংখীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার দাবি জানানো হয়। সেই পরিপেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদনও জানানো হয়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কবির ছোট ছেলে মীর মোহাম্মদ মনির জানান, আমরা বাবাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাবি ক্যাম্পাসে নেয়া এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরাস্থানে দাফন করার জণ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো সাড়া পাইনি। তাই উক্তসব স্থানে বাবাকে নেয়া সম্ভব হয়নি।
জাতীয় প্রেসক্লাবে এই বিষয়ে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কবি আল মাহমুদের কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এবং ঢাবিতে নিতে দেয়নি। তারা বাধা দিয়েছে। একইসাথে তাকে বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে দাফনের অনুমতিও দেয়নি। এইসব করে সরকার হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছে।
সরকার মুক্তিযোদ্ধা কবি আল মাহমুদকে প্রাপ্য রাষ্ট্রীয় সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বলেন, আল মাহমুদের ইন্তিকালে বাংলা সাহিত্য একজন শ্রেষ্ট কবি ও সাহিত্যিককে হারাল। দেশ ও জাতি একজন দেশপ্রেমিক মহান মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তী যোদ্ধাকে হারিয়েছে। কিন্তু দুঃজনক হলেও সত্য যে, ক্ষমতাশীন সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধ কবি আল মাহমুদকে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। মুক্তিযোদ্ধ হিসাবে নিথর কফিনে রাষ্ট্রীয় সম্মান টুকুও জানানো হয়নি। তিনি বলেন, সম্মানী ও গুনী মানুষকে যে সমাজ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে ব্যর্থ হয়, সে সমাজ ও রাষ্ট্রে গুনীজন জন্মে না।
এর আগে গতকাল সকালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রধান, আমাদের চেতনার অক্ষয় দ্যূতি কবি আল মাহমুদের ইন্তেকালে গোটা দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও গভীরভাবে  শোকাহত। কিংবদন্তিতুল্য কবির প্রতি বিএনপির পক্ষ  থেকে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। তিনি বলেন, কবি আল মাহমুদের কফিন শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর যদি তার লাশ শহীদ মিনারে আনতে  দেয়া না হয়, তাহলে এটিই প্রমাণিত হবে, এই সরকারের কাছে ভিন্নমতাবলম্বী আদর্শের মানুষের কোনো মূল্য  নেই, তিনি প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা হলেও। আরও প্রমাণিত হবে শহীদ মিনারও দলীয়করণ হয়ে গেছে।

Please follow and like us:

Check Also

খাবার স্যালাইন বিতরণ কলারোয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর

সারা দেশের মতো কলারোয়াতেও তীব্র তাপদাহ চলছে। গরমে সবারই হাঁসফাঁস অবস্থা। তবে থেমে নেই জনজীবন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।