ভারতকে ‘মুক্ত আকাশ’ সুবিধা দিলে স্বাধীনতা থাকবে না: বিএনপি

ক্রাইমবার্তা রিপোট: প্রতিবেশী ভারত বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর, সড়ক ও মুক্ত আকাশ সুবিধা নিলে আক্ষরিক অর্থেই দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলে কিছু থাকবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। আজ শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই আশঙ্কার কথা জানান।4

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের আকাশসীমা ও বিমানবন্দর ব্যবহার করতে ‘ওপেন স্কাই’ সুবিধা চায় ভারত। তিনি বলেন, ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশ চুক্তি আছে। কিন্তু কোনো দেশের সঙ্গেই মুক্ত আকাশ সুবিধা দেওয়ার চুক্তি নেই। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না, এমনকি প্রয়োজনও নেই। শুধু ভারতের স্বার্থে সরকার এ চুক্তি করতে পারে। এতে বিমান ব্যবসা একচেটিয়া ভারতের কাছে চলে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের বাইরে নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সিতে ভারত বাংলাদেশের বিমানবন্দর ও আকাশ ব্যবহারের ফলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। এটিকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া থেকে সরে আসার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, বর্তমান বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে তারা ভারতের হাতে উজাড় করে দিচ্ছে। অথচ বিনিময়ে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কিছুই পায়নি। ভারত একতরফাভাবে অভিন্ন নদীর পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এক লিটার পানিও তারা ছাড় দিচ্ছে না। বলতে গেলে বিনা মূল্যে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ও বিশ্বজনমতকে উপেক্ষা ও অগ্রাহ্য করে ভারত জবরদস্তিমূলকভাবে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করতে গিয়ে বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রতিবেশ, আবহাওয়া ধ্বংস করে বাংলাদেশি মানুষকে বিলুপ্ত যুগের প্রাণীদের দলে ঠেলে দেওয়ার আয়োজন চালাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে রিজভী অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও তাঁরা এক ধরনের ভীতি ও আশঙ্কার দোলাচালে দুলছেন। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, ক্যাডারদের দৌরাত্ম্যের মাত্রা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। কিন্তু এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যদিও নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কাজ সিসিটিভির মতো স্বচ্ছ হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন, তবু এখন পর্যন্ত সেটির কোনো নজির দেখা যাচ্ছে না। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান অভিযোগ করেছেন । আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া অন্য দলের প্রার্থীরাও ধানের শীষের প্রার্থীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছেন। নারায়ণগঞ্জ এমনিতেই সন্ত্রাসকবলিত এলাকা। নির্বাচন সামনে রেখে বৈধ অস্ত্র জমা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।

Please follow and like us:

Check Also

অনিশ্চয়তার নতুন যুগে মধ্যপ্রাচ্য

ইউক্রেন-রাশিয়া রেশ কাটতে না কাটতেই ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় ইসরাইলি আগ্রাসন। এরপর থেকে অশান্ত হতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।