ক্রাইমবার্তা রিপোট:ঢাকার নিম্ন আদালত থেকে ট্রাকচালককে ফাঁসির রায় দেয়াকে সঠিক উল্লেখ করে ঢাকা জেলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খোন্দকার আবদুল মান্নান দাবি করেছেন ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে নয় সাজা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার দায়ে।
আজ বুধবার দুপুরে পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে রেবতি ম্যানশনে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিপি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট অযৌক্তিক এবং আদালত অবমাননার শামিল।
আবদুল মান্নান বলেন, পরিবহন সংগঠনগুলো সঠিক তথ্য না জেনে কারো উসকানিতে ধর্মঘট ডেকেছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। সঠিক তথ্য হলো- ২০০৩ সালের ২০ জুন সাভারের ঝাউচার এলাকায় ট্রাকচাপায় খোদেজা বেগমের (৩৮) নিহত হওয়ার ঘটিনাটি ছিল পরিকল্পিত।
পিপি বলেন, মৃত্যুদণ্ড হওয়া ট্রাকচালক মীর হোসেনের বাড়ি এবং নিহতের বাড়ি একই এলাকায়। ঘটনার দিন নিহতের বাড়ির সামনের পারিবারিক রাস্তা দিয়ে ট্রাকে করে মাটি নিয়ে যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক মীর হোসেন। বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে ট্রাকের সামনে এসে দাঁড়ান খোদেজা এবং তার স্বামী নুরু গাজী। ওই সময় তারা তাদের পারিবারিক রাস্তা দিয়ে মাটিভর্তি ট্রাক চলাচলে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাকচালক মীর হোসেন তাদের ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই খোদেজার মৃত্যু হয়। স্বামী লাফ দিয়ে সরে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। তাই এটা কোনো দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ছিল না। ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। মামলার অভিযোগপত্র হয় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায়।
৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র হওয়ার পরও আসামিপক্ষ দুর্ঘটনা দাবি করে উচ্চ আদালতে যায়নি।
খোন্দকার মান্নান বলেন, এমনকি অভিযোগ গঠন এবং আত্মপক্ষ শুনানির পরও আসামি সড়ক দুর্ঘটনা দাবি করে উচ্চ আদালতে যাননি। আসামির এখনো উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে বলার সুযোগ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পিপি বলেন, ‘অবশ্যই রায়ের বিরুদ্ধে পরিবহন ধর্মঘট আদালত অবমাননার শামিল। বিষয়টি আমরা এখন পর্যবেক্ষণ করছি। তথ্য-প্রমাণ হাতে এলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পঞ্চম জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় উল্লিখিত মামলায় ট্রাকচালক মীর হোসেন মিরুর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। মামলায় মিরুর সহকারী ইনতাজ আলীকে খালাস দেন।
মামলাটিতে ২০০৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আদালত ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় বিচারকালে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
রায়ের পরই রাজধানীসহ সারা দেশে দুদিন ধর্মঘটের আহ্বান জানায় পরিবহন শ্রমিকরা। তবে আজ বিকেল থেকে ফের পরিবহন চলা শুরু হয়।