বন্যায় তিন জেলায় মৃত্যু ২১, নিখোঁজ ২৮

দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে এ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁওয়ে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়া রংপুর, কুড়িগ্রামসহ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ২৮ জন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব জেলার লাখ লাখ মানুষ। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ। ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন অনেকে।

এছাড়া ট্রেন ও সড়ক যোগাযোগ বিভিন্ন হয়ে পড়ায় পানিবন্দি হাজারও মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন। অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। তাদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।

প্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

দিনাজপুর: দিনাজপুর থেকে শাহ্ আলম শাহী জানান, দিনাজপুরে বন্যায় পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপায় এবং সাপের কামড়ে ১৪ জনের মুত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম।

তিনি আজ রোববার  জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা জনিত কারণে জেলায় পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপায় এবং সাপের কামড়ে ১৪ জনের মুত্যু হয়েছে।

এর মধ্যে দিনাজপুর সদরে ৩ জন, বিরলে ৫ জন, কাহারোলে ৪জন, নবাবগঞ্জে একজন এবং বীরগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়।

জেলা প্রশাসক জানান, পানিতে ডুবে ৯জন, দেয়াল চাপায় দু’জন এবং সাপের কামড়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, জেলার ৯টি উপজেলার ৫৭ ইউনিয়নের প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রোববার বিকেলে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ৩৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদরের খামার হলোখানায় সাপের কামড়ে অলিউর রহমানের স্ত্রী জ্যোস্না বেগম (২৫), পৌরসভার ভেলাকোপা এলাকার দুলু মিয়ার পূত্র বাবু (দেড় বছর) পানিতে ডুবে, ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের প্রাণকৃঞ্চ গ্রামের খাতক মামুদের ছেলে লুৎফর রহমান (৩৫) মাছ মারতে গিয়ে পানিতে ডুবে এবং গোড়কমণ্ডল বস্তি গ্রামের মৃত কাচু মামুদের ছেলে হযরত আলী (৫৫) আকস্মিক ঘরে পানি ঢোকায় আতঙ্কে মারা যান।

রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুল হক নুরু জানান, কালুয়ারচর ওয়াপদা বাঁধ রাতে ভেঙে যাওয়ার সময় রিফাত (১০) ও লোকমানের স্ত্রী (৩২) পানির তোড়ে ভেসে গেছেন।

এছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর দিয়েছেন শীর্ষনিউজের প্রতিনিধি জাকারিয়া মুসাতাফিজ। ওই নারীর নাম রেহেনা পারভীন।

Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।