যশোরে দেয়া হচ্ছে দেড় কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা উপকৃত হবেন ১৬ হাজার কৃষক

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ যশোর:   যশোরে ১৬ হাজার কৃষক কৃষি প্রণোদনা পেতে যাচ্ছেন। এই প্রণোদনা দিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ব্যয় হবে প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ২শ’ ২৫ টাকা। কৃষিতে ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেয়া হচ্ছে এই প্রণোদনা।
যশোরের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এতবড় কৃষি প্রণোদনা এর আগে কখনও দেয়া হয়নি। যে পরিমাণ অর্থ এই প্রণোদনায় বরাদ্দ করা হয়েছে সেটি একেবারে কম না বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয় সারাদেশে একডজন শষ্যে কৃষি প্রণোদনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে যশোরে দেয়া হবে ছয়টি শষ্যে। এগুলো হচ্ছে, ভুট্টা, সরিষা, তীল, গ্রীষ্মকালীন মুগ, বিটি বেগুন ও বোরো ধান। তালিকাভুক্ত কৃষক এক বিঘা জমির জন্যে উল্লেখিত শষ্যে প্রণোদনা পাবেন।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভুট্টা চাষে একজন কৃষক ১৩শ’২ টাকার প্রণোদনা পাবেন। এই হিসেবে তিন হাজার আটশ’ কৃষক পাবেন ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ৬শ’ টাকার প্রণোদনা। প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে থাকবে দু’কেজি ভুট্টার বীজ, ডিএপি সার ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি।
প্রণোদনার আওতায় ছয় হাজার কৃষককে সরিষা চাষের জন্যে মনোনীত করা হবে। তারা প্রত্যেকেই ৭শ’৮৬ টাকা ৫০ পয়সার প্রণোদনা প্যাকেজ পাবেন। এই প্যাকেজে থাকবে এক কেজি সরিষার বীজ, ডিএপি সার ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি। ছয় হাজার কৃষক প্রণোদনা বাবদ পাবেন ৪৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
তীল চাষের জন্যে মনোনীত করা হবে ৭শ’ কৃষককে। প্রত্যেক কৃষককে ভর্তুকি দেয়া হবে ৭শ’ ৯২ টাকা ৫০ পয়সা। সেই হিসেবে সাতশ’ কৃষক পাবেন ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৭শ’ ৫০ টাকা। এই প্যাকেজে প্রত্যেক কৃষক এক কেজি তীলের বীজ ডিএপি সার ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি করে পাবেন। যশোরে দেয়া হচ্ছে দেড় কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনাগ্রীষ্মকালীন মুগ চাষের জন্যে তালিকাভুক্ত করা হবে ২৫শ’ কৃষককে। প্রত্যেক কৃষক পাবেন ৯শ’ ৩৫ টাকার ভর্তুকি পণ্য। সেই হিসেবে গ্রীষ্মকালীন মুগ চাষে ২৩ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ টাকা ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। এই প্যাকেজের কৃষক পাবেন পাঁচ কেজি মুগ ডালের বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও পাঁচ কেজি এমওপি সার।
বিটি বেগুন চাষের আওতায় আনা হচ্ছে ২৫ জন কৃষককে। তাদের প্রত্যেকেই পাবেন ৯শ’ ৯৫ টাকার বীজ ও সার। সেই হিসেবে বিটি বেগুন চাষে ২৪ হাজার ৮শ’ ৭৫ টাকা ভর্তুকি দেয়া হবে। এই প্যাকেজের কৃষক ২০ গ্রাম বীজ, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন।
এ ছাড়া, বোরো ধান চাষের আওতায় প্রণোদনা দেয়া হবে ৩ হাজার কৃষককে। প্রত্যেক কৃষক ১ হাজার ২ টাকা ৫০ পয়সার বীজ ও সার পাবেন। সেই হিসেবে বোরো চাষে প্রণোদনা দেয়া হবে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৫শ’ টাকা। বোরো ধান চাষীরা পাবেন পাঁচ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রত্যেক কৃষক এক বিঘা জমিতে প্রণোদনার ফসল চাষ করতে পারবেন। এ হিসেবে যশোর জেলায় ১৬ হাজার ২৫ বিঘা জমিতে ভর্তুতির শস্য লাগানো হবে। কোন উপজেলায় কী পরিমাণ জমি ও কৃষক থাকবে সেটি এখনও বিভাজন করা হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে। এই বিভাজন জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় নির্ধারণ করা হবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
প্রণোদনার অর্থ যাতে কোনোভাবেই নয়ছয় না হয় এ জন্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষকের নিজস্ব একাউন্টে অর্থ পাঠিয়ে দেয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেট থেকে এই অর্থ সরবরাহ করা হবে। এ জন্যে সরকারের অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে না বলে কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, কৃষি সেক্টরে সরকার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষককে আরো বেশি উৎপাদনমুখি করা যাবে। আর তা ছাড়া যে পরিমাণে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে তা একেবারেই কম না।
Please follow and like us:

Check Also

আশাশুনির বদরতলা-ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের পরিত্যাক্ত খুটির রড: l দুর্ঘটনার শঙ্কা

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান( আশাশুনি) সাতক্ষীরা।। আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বদরতলা টু ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।