যে কারণে সংলাপে অংশ নেননি গয়েশ্বর

ক্রাইমবার্তা রিপোর্টঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলে শেষ মুহূর্তে নাম যুক্ত হলেও গণভবনে যাননি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এ সংলাপে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির ছয় সদস্য অংশ নেন।

জানা যায়, হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সংলাপে অংশ নিতে পারেননি। গয়েশ্বরের ব্যক্তিগত সহকারী শাহীনুল রহমান শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, স্যার হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই সংলাপে যেতে পারেননি।

বহুল প্রত্যাশিত সংলাপে সন্তুষ্ট নয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংলাপ শেষে বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে বেরিয়ে বেইলি রোডের বাসায় এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, সংলাপ থেকে তেমন কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এ সংলাপে সন্তুষ্ট নই। ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মেনে নেয়া না হলে আন্দোলন চলবে বলেও জানায় ঐক্যফ্রন্ট।

অন্যদিকে গণভবন থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, খোলামেলা পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। চাইলে আরও আলোচনা হবে। ৮ নভেম্বরের পর যে কোনো দিন ফের সংলাপ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে আরও ছোটপরিসরে বসা যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের ২২ সদস্য ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের ১৯ সদস্য অংশ নেন। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পর শুরু হয় এ সংলাপ।

শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গণভবন জনগণের ভবন, এখানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সময় কেমন উন্নয়ন হয়েছে, সেই বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। এ দেশটা আমাদের সবার, আসুন সবাই মিলে দেশের উন্নয়ন করি। দেশের মানুষ যাতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করে, আমরা সবাই মিলে সে কাজটি করি। দেশের জন্য আমরা যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি, এর গতিধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছি।

সংলাপ শেষে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। সংলাপে সন্তুষ্ট কিনা, সংলাপে কী কী হল- সাংবাদিকদের বারবার এমন জিজ্ঞাসার মুখে তিনি বলেন, সন্তুষ্ট নই। আর কোনো কথা তিনি বলেননি।

তবে গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে সংলাপ কেমন হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, আলোচনা ভালো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে সংলাপ শেষ হয়। সাড়ে ৩ ঘণ্টার সংলাপে খোলামেলাভাবে অনেক বিষয় আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট ও আওয়ামী লীগ নেতারা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির বিষয়ে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এমন মনোভাবই দেখানো হয়েছে।

সংলাপ শেষে ড. কামাল হোসেনের বাসায় যান মির্জা ফখরুলসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। সেখানে প্রায় ২০ মিনিট বৈঠকের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন জোট নেতারা। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংলাপে আমরা আমাদের কথা বলেছি। উনি (প্রধানমন্ত্রী) দু-একটি বিষয় ছাড়া কোনো বিষয়ই স্পষ্ট করেননি। প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে আরও আলোচনা হবে বলে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা বলেছি, সংবিধানের ভেতরে থেকেই আমাদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আপনার সদিচ্ছা প্রয়োজন।

Please follow and like us:

Check Also

আশাশুনির বদরতলা-ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের পরিত্যাক্ত খুটির রড: l দুর্ঘটনার শঙ্কা

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান( আশাশুনি) সাতক্ষীরা।। আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বদরতলা টু ব্যাংদহা সড়কে পল্লী বিদ্যুতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।