ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় নির্বাচনি মাঠ দখল নেয়ার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন দল। একের পর এক ,হামলা ,মামলা ও গ্রেফতারের শিকার হচ্ছে ধানের শীষের নির্বাচনি কর্মীরা। জেলা রির্টানিং কর্মকর্তাকে অব্যহতি করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে নির্বাচনি প্রার্থীদের অভিযোগ। পুলিশ প্রশাসকে ব্যবহার করে সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা ধানের শীষের নির্বাচনি প্রচার মাইক ভাংচুর, বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের পুলিশকে ধরিয়ে দেয়া ,জেলার শতাধীক স্থান থেকে ধানের শীষের পোষ্টার তুলে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধানের শীষের প্রচার কালে কলারোয়া থেকে জামায়াতের চার নেতাকে আটক করে নাশকতার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিষ্ফরক আইনে মামলা দিয়েছে পুলিশ।
সন্ধায় সাতক্ষীরা শহরের রার্জপার্ক সংলগ্ন সড়কে জামায়াতের মুহাদ্দীস আব্দুল খালেকের র্নিবাচনি প্রচার মাইক ভাংচুর করেছে দুবৃত্তরা। প্রচার মাইক, ইইজবাইক চালক মুস্তাফিজুর রহমানকে মারপিট করে তারা।
এদিকে কলারোয়ায় বিএনপির প্রাথী হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্বাচনী প্রচার মাইক-ইজিবাইক ভাংচুর, ইজিবাইকের চালককে মারপিট এবং পোস্টার ছিড়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ১২নং যুগিখালী ইউনিয়নের ওফাপুর মোড়ে ও দুপুরে কুশোডাঙ্গা বাজারে পৃথক এ ঘটনা ঘটে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের প্রাথীী বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব অভিযোগ করে বলেন, সন্ধায় আমার প্রচার মাইক ওফাপুর মোড়ে পৌছালে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা প্রচার মাইক প্রচারকাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক ভাংচুর করে।
এসময় ইজিবাইক চালক মন্টু ও প্রচার কাজে নিয়োজিত জাহিদুলকে বেধরক মারপিট করে আহত করা হয়।
হাবিবুল ইসলাম হাবিব আরো বলেন, উপজেলার ১০নং কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের কুশোডাঙ্গা বাজারে মঙ্গলবার দুপুরে ধানের শীষের টাঙানো পোস্টার ছিড়ে আগুন ধরিয়ে ক্ষমতাসীনরা।’
এ বিষয়ে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার কাছে তিঁনি মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছি।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর.এম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান- ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা ব্যাপী পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৫৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পযর্ন্ত সাতক্ষীরা জেলার আটটি থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ৫ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আজম খান জানান,সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে ১৩ জন,কলারোয়া থানা থেকে ৬ জন,তালা থানা থেকে ৮ জন,কালিগঞ্জ থানা থেকে ৯ জন,শ্যামনগর থানা থেকে ৫ জন,আশাশুনি থানা থেকে ৮ জন,দেবহাটা থানা থেকে ২ জন ও পাটকেলঘাটা থানা থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
সাতক্ষীরা সদও ২ নং আসনে জামায়াত মনোনিত ২০ দলের প্রার্থী মুহাদ্দীস আব্দুল খালেকের নির্বাচনি পোষ্টার ছিলে ফেলেছে পুলিশ ও ছাত্রলীগ। এবিষয়ে জামায়াত জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে আচারণ বিধি লঙ্গনের লিকিত অভিযোগ করেছে। লিখিত অভিযোগে তারা বলেছে,সাতক্ষীরা শহর ও সদরের বিভিন্ন জায়গাতে ঝুলানো ধানের শীষের পোষ্টা তুলে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচনি মাইক বের হতে দেয়া হচ্ছে না। সমাবেশে করতে দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনি সমাবেশ থেকে নেতাকর্মীদেও আটক করা হচ্ছে। বিএনপি জামায়াতের নির্বাচনি কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ গ্রেফতার করছে। বাড়িতে নাপেলে হুমকি দিচ্ছে।
শ্যামনগরের নুরনগর হতে আটক করা হয়েছে মতিয়ার রহমান (৫৫) কে। পদ্মপুকুর গ্রাম হতে আটক করা হয়েছে রেজওয়ান নামের অপর এক জামায়াত কর্মী কে। একই আসনের ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের মিজানুর রহমানের বাড়ীতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সাতক্ষীরা সদরের আগরদাঁড়ী হতে আঃ সাত্তার (৫৫) এবং তার পূত্র গোলাম সরোয়ার (২৮) কে আটক করেছে পুলিশ ।পরিবারের দাবী তাদের নামে কোন মামলার ওয়ারেন্ট ছিল না।
এ দিকে আগরদাড়ী মাদ্রাসার সামনে টাঙানো ধানের শীষের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছ। আগরদাড়ী ইউনিয়নের কাশেমপুর হতে প্রায় ১০ কি:মি. সড়কে পুলিশের সহযোগীতায় ধানের শীষের পোষ্টার নামিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বৈকারী ইউনিয়নের কাথন্ডা ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বও জামায়াত নেতা জালাল উদ্দীন কে ধানের শীষের পোষ্টার সাটানোর সময় পুলিশ আটক করে। পরে তাকে অস্ত্র মামলা গ্রেফতার দেখিযে দিয়ে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। এঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সাতক্ষীরা শহরের ৭ নং ওয়ার্ডে পুলিশের দুই কনস্টেবলের নের্তত্বে ধানের শীষের পোষ্টার তুলে ফেলার অভিযোগ করেছে স্থানীয় বিএনপি।
অন্যদিকে পৌর ৫ নং ওয়ার্ড বাটকেখালী হতে ধানের শীষের পোষ্টার নামিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ,যুবলীগ ও আ’লীগের কর্মীরা। সাতক্ষীরার নিউমার্কেট মোড়ে লাগানো ধানের শীষের পোষ্টার ছিড়ে নিল ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা।
এদিকে কলারোয়াতে বিএনপি জামায়াতের ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ পরে তাদেরকে ককটেল বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগে মামরা দায়ের করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে কলারোয়া থানার অফিসার ইনসচার্জ শেখ মারুফ আহম্মেদ জানান- উপজেলার ওফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার লক্ষে জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের মৃত এজাহার আলীর ছেলে জয়নগর ইউনিয়ন জামাতের আমির মহব্বত আলী (৫৫), চন্দনপুর ইউনিয়নের চান্দুড়িয়া গ্রামের মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে চন্দনপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমি আব্দুল গফুর মন্টু (৫৫), বৈদ্যপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদ ফকিরের ছেলে ওয়ার্ড জামায়াতের আমির শফিকুল ইসলাম (৬৫), হিজলদী ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত আবু বক্কর মন্ডলের ছেলে ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আব্দুল মজিদ (৬০) কে আটক করা হয়।
সেখান থেকে পুলিশে উপস্থিত টের পেয়ে ২৫/৩০জন নাশকতাকারী পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থান থেকে বিস্ফোরিত ককটেল বোমার অংশ, জালের কাঠি, কাচের টুকরা, জর্দ্দার কোটার অংশ, বিয়ারিং বল, বাশের লাঠি, ভ্যানের টায়ার উদ্ধার করে।
এঘটনায় কলারোয়া থানায় ১৬জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং ২৫/৩০জনকে অজ্ঞাত করে একটি মামলা নং-০৭(১২)১৮ দায়ের হয়েছে।
তালা -কলারোয়া-১ আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রর্থী বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানান, নির্বাচনি প্রচার যদি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হয় তা হলে নির্বাচনি প্রচার করবো কি করে।