ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের ‘উদ্বেগ’ কমাতে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহযোগিতাও লাগবে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি চট্টগ্রামে এসে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘দেশে অনেক ভুঁইফোড় অনলাইন ও অনলাইন টিভি রয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যম আজকের বাস্তবতা। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও আজকের বাস্তবতা। বাংলাদেশে শুধু নয়, সমগ্র পৃথিবীতে অনলাইন মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। এই বিস্তৃতি বন্ধ করা সঠিক নয়। তবে এটি যাতে সঠিকভাবে এবং নিয়মনীতির মধ্যে থেকে পরিচালিত হয়, সে কাজটি করা আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, ‘অনলাইনের জন্য নীতিমালা হচ্ছে, রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা হচ্ছে। অনলাইনের যখন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা হবে, নীতিমালার ভিত্তিতে তখন ভুঁইফোড় অনলাইনগুলো বন্ধ হয়ে যাবে, কমে যাবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমার পূর্বসূরি সেই কাজটি অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’
সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব। ২৮ তারিখ (২৮ জানুয়ারি) সময়সীমা আছে, চেষ্টা করব এই সময়সীমার মধ্যে গেজেট (প্রজ্ঞাপন) প্রকাশ করা যায় কি না। কিন্তু তা করতে গেলে অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়। যত দ্রুত সম্ভব সেটি আমরা করব। বর্তমান যে ওয়েজ বোর্ড, তাতে টেলিভিশন নেই। টেলিভিশন সাংবাদিকদেরও সেখানে আসা দরকার। সেটি নিয়ে আমরা পরে কাজ করব।’
চট্টগ্রামের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রামকে একটি নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে ১০০ বছর ধরে কেবল মাপজোখ করেও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করতে পারেনি কেউ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে নতুন বে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন বে টার্মিনাল নির্মিত হলে বর্তমান চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়েও আরও অধিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন একটি বন্দর হয়ে উঠবে। চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রের ৬ ঘণ্টার সম্প্রচারকে ১২ ঘণ্টায় উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন। ভারতীয় উপমহাদেশ তো নয়ই, পুরো এশিয়া মহাদেশে যেখানে গণতান্ত্রিকভাবে সরকার নির্বাচিত হয় সেখানে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর ছাড়া অন্য কোথাও একই দল পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় যায়নি। এভাবে পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আওয়ামী লীগকে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব হচ্ছে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার। শেখ হাসিনা কর্মঠ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমরা দুটি স্বপ্নের কথা বলেছিলাম। একটি হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ, আরেকটি হচ্ছে দিনবদল। যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান দিই আমরা তখন অনেকেই এটিকে নিছক নির্বাচনী স্লোগান বলে হাস্যরস করেছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবতা।’
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ