রাষ্ট্রদূতকে তলব: মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে আবারো মিয়ানমারের অংশ দেখানো হলো

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাইট কোপর নিকাসের মানচিত্রে সেন্টমার্টিন দ্বীপটিকে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে মিয়ানমারের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাখ্যা চাইতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, কোপর নিকাসে বাংলাদেশেরও অবদান রয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তথ্যের সূত্রটা আমরা জানতে চাই। যেই এটার জন্য দায়ী হোক না কেন, আমরা তা মোকাবেলা করব। এটা মিয়ানমারের কারণে হয়ে থাকলে অবশ্যই আমরা প্রতিবাদ জানাবো। এর আগেও এ ধরনের চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে গত বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কোপর নিকাসের মানচিত্রে সেন্টমার্টিন সংক্রান্ত তথ্যের সূত্র জানতে চাওয়া হয়েছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতেও সরকারি ওয়েবসাইটের মানচিত্রে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপকে নিজেদের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল মিয়ানমার। এ ঘটনার প্রতিবাদে মিয়ানমারের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (সিডিএ) অং খোয়াকে তলব করেছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিডিএ তাৎক্ষণিকভাবে ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরেও মানচিত্রে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপকে নিজ দেশের অংশ হিসেবে দাবি করেছিল মিয়ানমার। উসকানিমূলক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে মিয়ানমারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত লুইন উকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। ঘটনাটিকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ মন্তব্য করে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন রাষ্ট্রদূত। এরপর মিয়ানমার মানচিত্র সংশোধন করে নেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায়।
সেন্টমার্টিন নিয়ে মিয়ানমারের কর্মকাণ্ডকে ‘দূরভিসন্ধিমূলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। কর্মকর্তাটির মতে, ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারত থেকে মিয়ানমার বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপটি ভারতেরই অংশ ছিল। তখনকার মানচিত্রে এই সীমারেখাটি পরিষ্কার। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর সেন্টমার্টিন পাকিস্তানের অংশ হয়। আর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দ্বীপটি বাংলাদেশের মানচিত্রে আসে। এই দ্বীপ কখনোই মিয়ানমারের অংশ ছিল না। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সাথে সই হওয়া চুক্তিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি পরিষ্কারভাবে বাংলাদেশের অংশ ছিল। ২০১২ সালের মার্চে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে করা মামলার রায়ে সেন্টমার্টিনকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে কোনো বিতর্ক থাকতে পারে না।

Check Also

স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালালেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ! ভাবতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি তেমনি এক ঘটনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।