হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী হামলায় আহত, কর্মীদের বিক্ষোভ: জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইসির

বরিশাল সিটি করপোরেশনের আজ সোমবারের নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা হয়েছে। এতে তিনিসহ দলের বেশ কিছু নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন।

হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কয়েক শ নেতা-কর্মী বিক্ষোভ শুরু করেন।

এ ছাড়া দলটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-মারধর-হয়রানি, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের বাধা দেওয়া, জোরপূর্বক ভোট।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী (হাতপাখা প্রতীক) সৈয়দ ফয়জুল করিমের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হয়েছে।

হাতপাখা প্রতীকের মিডিয়া সেল থেকে সাংবাদিকদের বলা হয়, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনারের কাছে অভিযোগগুলো জানানো হয়েছে।

সৈয়দ ফয়জুল করিম হামলায় আহত হয়েছেন
সৈয়দ ফয়জুল করিম হামলায় আহত হয়েছেনছবি: সংগৃহীত
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ দুপুরের দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কল করা হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল রোববার পর্যন্ত প্রার্থীরা বলেছেন, ভোটের পরিবেশ ভালো আছে। আজ হাতপাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী অভিযোগ করেছেন। মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ সকাল ৮টায় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট শুরুর পর থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থীর মিডিয়া সেল সাংবাদিকদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে থাকে।

হাতপাখা প্রতীকের মিডিয়া সেল থেকে করা অভিযোগগুলো হলো সিটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করা চেয়ার-টেবিল ফেলে দিয়ে তাঁদের মারধর করা হয়েছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের শেরেবাংলা দিবা-নৈশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হাতপাখা প্রতীকের পোলিং এজেন্টের কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

হামলায় আহত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিম
হামলায় আহত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমছবি: সংগৃহীত
৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ওজোপাডিকা-২ (ওয়াপদা অফিস) কেন্দ্রে হাতপাখা প্রতীকের এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাতপাখা প্রতীকের ভোটারদের যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের আসমত মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে হাতপাখা প্রতীকের ক্যাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণাফুলিয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী ভোটারদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে নৌকা প্রতীকে জোর করে ভোট দেওয়া হয়েছে। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আ্বদুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইভিএম নষ্ট হয়ে যায়।

২২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে হাতপাখার নারী কর্মীদের কেন্দ্রের কাছে যেতে বাধা দেওয়া হয়।

২ নম্বর ওয়ার্ডের কাদের চৌধুরী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হাতপাখার কর্মীদের মারধর করা হয়। এই খবর পেয়ে মেয়রপ্রার্থী ফয়জুল করিম ঘটনাস্থলের যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকা গাড়ি ও লোকজনের ওপর হামলা হয়।

পরে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান ফয়জুল করিম। সেখান থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন ব্যক্তি মেয়রপ্রার্থীর ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান। হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল ব্যবহার করেন। এতে তিনিসহ দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী আহত হন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভছবি: প্রথম আলো
হাতপাখার মেয়রপ্রার্থীর মিডিয়া সেলের সদস্য এইচ এম সানাউল্লা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দলের নেতা-কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। কোথাও হামলা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে।

কিছু কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। মেয়রপ্রার্থীর পক্ষ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। মেয়রপ্রার্থীর ওপর হামলার বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) কমিশনার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

 

বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইসির
নিজস্ব প্রতিবেদকঢাকা

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবীব খান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেছেন আহসান হাবীব খান। তিনি বলেন, এখন ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে।

হামলাকারীদের আগে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে। তারপর তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

দুপুরে সৈয়দ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা হয়েছে। এতে তিনিসহ দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে দলের কয়েক শ নেতা-কর্মী বিক্ষোভ শুরু করেন।

 

Please follow and like us:

Check Also

এক নারীতে ধরাশায়ী ৩ চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগ নেতা

বরগুনার তালতলীতে এক নারীতে ধরাশায়ী হয়েছেন তিন চেয়ারম্যান ও এক ছাত্রলীগ নেতা। আলোচিত আপত্তিকর ভিডিওর ঘটনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।