সাতক্ষীরায় খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ব্রহ্মরাজপুর এলাকার খেঁজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। ঘুর্ণিঝড় মিধিলির কারনে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে শীত পড়তে শুরু করেছে। আর শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে সাতক্ষীরার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা গাছ প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন। যারা খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে গাছ কাটায় পারদর্শী স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে গাছি বলা হয়। এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ করছেন। এলাকায় গাছি/ শিউলিদে সংখ্যা কমে যাওয়ার কারনে পর্যাপ্ত খেজুর গাছ থাকলেও রস সংগ্রহে ও ভেজাল মুক্ত গুড় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী। জানা গেছে, এবার গাছ কাটার সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। গাছিরা প্রতিটি গাছ কেটে প্রস্তত করছেন ৮০থেকে ১০০ টাকায়। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদা মতো গাছিদের পারিশ্রমিক মিলছে না। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গাছ কাটছে গাছিরা। গাছ প্রস্তত করার পর শুরু হবে রস সংগ্রহের কাজ। এরপর তৈরি হবে উৎকৃষ্ট মানের গুড় ও পাটালি। ভেজাল ও চিনি মুক্ত গুড় ও পাটালি তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালায় গাছিরা। কথা হয় ধুলিহর বালুইগাছা গ্রামের গাছি তরিকুলের সাথে। তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ কেটে প্রস্তত করা হচ্ছে। তারপর তৈরি হবে গুড়। প্রতিবার এই গাছ কেটে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করি। গুড় পাটালি বিক্রি করা হয় বাজারে। আর কয়দিন পরে গাছে গাছে মাটির ভাড় বেধে দেওয়া হবে রস সংগ্রহের জন্য। ব্রহ্মরাজপুরে গাছি আল্লাদ আলী বলেন, এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছ কেটে প্রস্তত করা হচ্ছে। সবজিনিসের উদ্ধগতি মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদা মতো পারশ্রমিক মিলছে না। গাছ কাটার সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। গাছ কাটার পারশ্রমিক মূল্য আরও বাড়ালে ভালো হতো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাংলাদেশের অনেক সংস্কৃতি আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখনো যে শিল্পগুলো বিলুপ্ত হতে হতে উকি মারছে সময়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এই শিল্পগুলো আবার প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে এমনটায় প্রত্যাশা করেন বিশেজ্ঞরা। এব্যাপারে সাতক্ষীরা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মনির হোসেন দৃষ্টিপাতকে জানান, এলাকায় যে দক্ষ গাছি/ শিউলি আছে তাঁদের মাধ্যমে যেসকল শিক্ষত বেকারেরা আগ্রহী এ পেশায় আসতে চাই তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিবেন। যদিও সরকারি কোনো বাজেট নেই কোনো বেসরকারি এনজিওর মধ্যমে এটি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

Please follow and like us:

Check Also

গ্রীষ্মের তাপদাহে .. সাতক্ষীরার ২৭টি নদী ও ৪২৯টি খাল শুঁকিয়ে গেছে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের জনজীবন

আবু সাইদ বিশ্বাস, সাতক্ষীরা :  প্রখর রৌদ্র, গ্রীষ্মের তাপদাহ ও বৃষ্টিপাতের দেখা না মেলায় সাতক্ষীরা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।