পাইকগাছায় মুখে আঠা দিয়ে গৃহবধূ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১

খুলনার পাইকগাছায় গৃহবধূকে (৪৫) ধর্ষণ ও লুটের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুস সামাদ (৫০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পাইকগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ধর্ষণ ও এর ঘটনায় অজ্ঞাতমানা ২ থেকে৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওই গৃহবধূর প্রতিবেশীরা হাত-পা বাঁধা ও চোখে-মুখে আঠা লাগানো অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসকেরা তার চোখ ও মুখের আঠা অপসারণ করেন। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মামলার এজাহার বাদী উল্লেখ করেছেন, আমি কাঁচা মালের ব্যবসা করি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কাঁচা মাল নিয়ে পাইকগাছা থানাধীন গড়ইখালী হাটে যাই। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টার দিকে আমার এক প্রতিবেশী মোবাইলে ফোন করে জানান, আমার স্ত্রী অচেতন, রক্তাক্ত, চোখে ও মুখে আঠা জাতীয় পদার্থ লাগানো, ওড়না দিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শোবার ঘরের বিছানার ওপর থেকে প্রতিবেশী লোকজন উদ্ধার করেছে। বাড়ি এসে উপস্থিত লোকজনের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি। পরে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সে করে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাঝে মাঝে তার জ্ঞান ফিরলে তার কাছ থেকে জানতে পারি গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ জন লোক যে কোনো উপায়ে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করলে আমার স্ত্রী কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমার স্ত্রীকে একটি ওড়না দ্বারা হাত-পা বেঁধে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের রিং, ১০ হাজার টাকা জোর পূর্বক টান দিয়ে কান ছিড়ে রক্তাক্ত জখম করে নিয়ে নেয়।

আমার স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে থাকা ১১ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। তারা আমার স্ত্রীর একটি হলুদ রংয়ের আইটেল বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। দস্যুরা আমার স্ত্রীর দুই চোখে ও মুখে সুপার গ্লু জাতীয় আঠা দেয় এবং অন্য একটি ওড়না দিয়ে চোখ মুখ বেঁধে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করাসহ শারীরিক নির্যাতন করে। দস্যুরা দস্যুতা সংঘটন করে ৪টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-২ এর সহকারী রেজিস্ট্রার চিকিৎসক মো. কনক হোসেন বলেন, ওই রোগী সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন। তিনি স্বাভাবিক কথাবার্তা বলছেন, খাবারও খাচ্ছেন। তার আপাতত বড় ধরনের ঝুঁকি আমরা দেখছি না।

Please follow and like us:

Check Also

চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

অতি তীব্র তাপদাহের মধ্যে চলতি বছরে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।