ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ-ইফতার

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাস্ট) সম্মিলিত ইফতারে নিষেধাজ্ঞা ও রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করেছে ধর্মপ্রাণ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ ইফতার আয়োজনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। তবে শেষ পর্যন্ত এই কর্মসূচি নির্বিঘ্নে আয়োজন করা সম্ভব কিনা সেটি নিয়েও অনেকের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছিল। তবে মঙ্গলবার প্রথম রমজানে টিএসসিতে আয়োজিত গণ-ইফতারে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আলোচিত এই ইফতার কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। আগত শিক্ষার্থীরা গণ-ইফতার কর্মসূচিকে সফল করতে সব ধরনের সহায়তা করেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদ ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা তাদের বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্মিলিত ইফতারে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্তে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্লিপ্ততা ও ব্যর্থতারও তীব্র নিন্দা জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নোমান বলেন, মুসলমানদের শত বছরের সংস্কৃতি ইফতার মাহফিল। এটাকে আমাদের অধিকার হিসেবে দাবি করার প্রয়োজন হয়নি কখনো। কুচক্রীর ছিনিয়ে নেয়ার অপপ্রয়াস আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতিকে আন্দোলনের মুখপাত্র হিসাবে দাড় করিয়ে দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পায়রা চত্বরে শত শত শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ ইফতার মাহফিল কুচক্রীদের ভীতির কারণ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। ষড়যন্ত্রকারীদের ঘৃণ্য চক্রান্ত আমাদের সচেতনতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। কণ্ঠ রুদ্ধ করা হাতের বিরুদ্ধে আমাদের বজ্র কণ্ঠ, অপশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের শির সর্বদাই উঁচু থাকবে। ঢাবি শিক্ষার্থী আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ঢাবি ছাত্রদের এ গণ-ইফতার চক্রান্তকারীদের মুখে চপেটাঘাত। এ জনপদে হাজারো বছর ধরে বিরাজমান ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত কখনো সফল হবে না, এদেশের সচেতন ছাত্রসমাজ তা হতে দিবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজসহ আরও অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজক শিক্ষার্থীরা।

Please follow and like us:

Check Also

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যাহা কিছু করার প্রয়োজন তাই করা হবে: সাতক্ষীরায় নির্বাচন কমিশনার

শাহ জাহান আলী মিটন,  সাতক্ষীরা: নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেছেন, নির্বাচন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।