‘বন্দি উইঘুর মুসলিমদের চুল থেকে তৈরি’ চীনা পণ্যের চালান জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ক্রাইমর্বাতা ডেস্করিপোট:  চুলজাতীয় চীনা পণ্যের একটি চালান জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তাদের সন্দেহ, পণ্যগুলো তৈরিতে শিনজিয়াংয়ে বন্দি শিবিরে আটক উইঘুরসহ সংখ্যালঘু মুসলিমদের চুল ব্যবহার করা হয়েছে। মার্কিন কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা (সিবিপি) বিষয়ক কর্মকর্তারা জানান, বুধবার ১৩টন পরিমাণ চুলজাতীয় পণ্যের চালান জব্দ করা হয়েছে। পণ্যগুলোর আর্থিক মূল্য আনুমানিক ৮ লাখ মার্কিন ডলার। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
সিবিপির বাণিজ্য বিষয়ক কার্যালয়ের নির্বাহী সহকারী কমিশনার ব্রেন্ডা স্মিথ জানান, এই পণ্যগুলোর উৎপাদনে ঘোরতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এগুলো জব্দের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক সকলের কাছে স্পষ্ট বার্তা যাবে যে, অবৈধ ও অমানবিক চর্চা সহ্য করবে না মার্কিন সরবরাহ চেইন।

প্রসঙ্গত, এ নিয়ে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সন্দেহে চীনা পণ্যের চালান জব্দ করার বিরল পদক্ষেপ নিয়েছে সিবিপি। বুধবারের চালানটি পাঠিয়েছিল চীনের লপ কাউন্টি মেইক্সিন হেয়ার প্রডাক্ট কোম্পানি লিমিটেড। এর আগে মে মাসে হেইতান হাওলিন হেয়ার একসেসরিস কোম্পানি লিমিটেডের একটি চালানও একইরকমভাবে জব্দ করা হয়।

যদিও প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছিল, তাদের পণ্যগুলো কৃত্তিম চুল দিয়ে তৈরি, মানব চুল দিয়ে নয়। উভয় কোম্পানিই শিনজিয়াংয়ে অবস্থিত। গত চার বছরে সেখানে ১০ লাখের বেশি উইঘুর মুসলিমকে বন্দি শিবিরে আটক করে রাখার অভিযোগ রয়েছে চীনা সরকারের বিরুদ্ধে। চীন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, কর্ম ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয় শিবিরের বন্দিদের। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, শিবিরগুলোতে উইঘুরদের প্রতি নৃশংস নির্যাতন করা হয়। মগজধোলাই করে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ভুলিয়ে চীনা সংস্কৃতি মানতে বাধ্য করা হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অনুসারে, বন্দি শিবিরের বাসিন্দাদের মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পণ্য তৈরিতে বাধ্য করা হয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, শিবিরগুলোয় কাউকে জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করা হয় না। গত ডিসেম্বরে শিনজিয়াং কর্তৃপক্ষ জানায়, শিবিরগুলোর বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। শিবিরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে স্বতন্ত্রভাবে এ দাবির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। উইঘুর ও কাজাখ সম্প্রদায়ের সদস্যরা এপিকে জানিয়েছে, তাদের কিছু আত্মীয়কে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, তবে অনেকে এখনো আটক আছেন। তাদের জেলে বা অন্যকোথাও জোরপূর্বক শ্রমদানে পাঠানো হয়েছে।

Please follow and like us:

Check Also

সাতক্ষীরায় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার,হোটেল রেস্তোরা ও বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

সাতক্ষীরায় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ১১তম বছর পূর্তি উপলক্ষে র‌্যালি, কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।