ঘরে ফেরার পথ নেই, অধিকার আদায়ে মরণযুদ্ধ করতে হবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান সরকারকে স্বাধীনতার শত্রু ও গণতন্ত্রের শত্রু আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এরা দেশে ফ্যাসিবাদী রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি বলেন, আমরা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত আন্দোলন। এবার অধিকার আদায়ে মরণ যুদ্ধ করতে হবে। আমাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আর পথ নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী জোবায়দা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে নয়াপণ্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ সমাবেশ শুরু হয়। দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মুষলধারে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে শুরু হতে পারেনি সমাবেশ। দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে জমে থাকা পানির মধ্যেই নেতাকর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এই সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকার ভীরু ও কাপুরুষ। তারা প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।

তিনি বলেন, এই ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে জনগণকে উদ্ধার করার যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার নেতৃত্বে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। আজকে সেই তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। শুধু তারেক রহমানকেই নয়, যিনি কোনোদিনই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না সেই ডা. জোবায়দা রহমানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি তারেক রহমানের সহধর্মিণী।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদেরকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন কোনো চাপে আছেন কিনা- তিনি বললেন কোনো চাপে নেই, তবে বিবেকের চাপে আছি। আসলে সরকার চোখে অন্ধকার দেখছে। তাই তারা একেক সময় একেক কথা বলছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দুর্নীতির অভিযোগে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরকার প্রধানের বিরুদ্ধেও ১৫টি মামলা হয়েছিলো। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মামলাগুলো নাই করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সরকার আজ তাদের পদোন্নতি দিচ্ছেন। আজ সমগ্র দেশ দুর্নীতি মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে পড়েছে।

ফখরুল বলেন, আজকে বিনা অপরাধে আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে নেওয়া হচ্ছে, ফাঁসির আদেশ দেওয়া হচ্ছে। যারা অবৈধ রায় দিচ্ছেন সেইসব বিচারপতিদের আল্লাহর কাছে একদিন জবাব দিতে হবে। এই ন্যায় বিচারের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। অতীতের কথা সবসময় স্মরণ রাখবেন। সেই শ্লোগানের কথা ভুলে যাবেন না- বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা।

তিনি বলেন, আজকে চাল-ডাল, বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বেড়েছে। সেদিকে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভিসা পান না। ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ। সেদিকে সরকারে কোনো ভ্রুক নেই। কিন্তু তাদের একটাই চিন্তা কিভাবে ক্ষমতায় ধরে রাখা যায়।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুব মহাসচিব রুহুল কবি রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শিমুল বিশ্বাস প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওণকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।

 

Please follow and like us:

Check Also

কালিগঞ্জে সুমন ও শ্যামনগরে সাইদ জয়ী

শঙ্কা, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা থাকলেও সাতক্ষীরার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল অবস্থান ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারণে দু-একটি বিচ্ছিন্ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।